শুক্রবার ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

>>
বিএনপিপন্থি দু’গ্রুপের বিরোধ

শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রশাসক নিয়োগ হচ্ছে কেআইবিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক:   |   সোমবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৫   |   প্রিন্ট

শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রশাসক নিয়োগ হচ্ছে কেআইবিতে

শৃঙ্খলা ফেরাতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে (কেআইবি) প্রশাসক নিয়োগের কথা ভাবছে সরকার। রোববার সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ কেআইবিতে গিয়ে এ তথ্য জানান।

জানা গেছে, এক যুগেরও বেশি সময় কেআইবিতে চলেছে লুটপাট। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপিপন্থি কৃষিবিদদের দখলে চলে যায় কেআইবি। ভাগবাটোয়ারা নিয়ে তারা দুই ধারায় বিভক্ত। গত শুক্রবার রাতে দু’পক্ষ সংঘর্ষেও জড়ায়। ৩৫ হাজার কৃষিবিদের এই সংগঠনটির এখন কোনো কমিটি নেই।

দু’পক্ষের সংঘর্ষের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, স্বনামধন্য এ সংগঠনে বিশৃঙ্খলা কাম্য নয়। এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। শৃঙ্খলা ধরে রাখতে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের মাসিক আয়ের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এ্যাব) আহ্বায়ক রাশিদুল হাসান হারুন ও বিএনপির গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। হারুন গ্রুপের নেতৃত্ব দেন কৃষিবিদ নুরুন্নবী শ্যামল আর শামীম গ্রুপের নেতৃত্ব দেন কৃষিবিদ শফিক, কৃষিবিদ ইয়ার মাহমুদ প্রমুখ।

জানা গেছে, সংঘর্ষের ঘটনায় গতকাল তাৎক্ষণিকভাবে শামীম গ্রুপের কৃষিবিদ রুহুল আমিন ও একজন বহিরাগতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধনপ্রাপ্ত এই সংগঠনের কৃষিবিদরা আওয়ামী লীগ আমলেও দুই ধারায় বিভক্ত ছিলেন। একটির নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক। অন্যটির নেতৃত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। কেআইবির সর্বশেষ নির্বাচন হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে। ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হয় ২০১৮ সালে। তবে মামলা-পাল্টা মামলায় এক কমিটি দিয়েই চলেছে আট বছর। হাইকোর্টের নির্দেশে ২০২৩ সালের ৩ নভেম্বর কার্যনির্বাহী কমিটি বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগ দেয় সমাজসেবা অধিদপ্তর। সে সময় আওয়ামীপন্থি কৃষিবিদরা কেআইবির দখল ছাড়েননি। তারা প্রশাসককে কেআইবিতেই ঢুকতে দেননি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপিপন্থি কৃষিবিদরা কেআইবির দখল নেন।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, রোববার উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ কেআইবিতে যাওয়ার পর লুটপাটের নানা তথ্য বেরিয়ে আসে। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের মূল মিলনায়তন ছাড়াও একাধিক হলরুম বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভাড়া দেওয়া হয়। এসব অনুষ্ঠানের খাবার সরবরাহ ও সাজসজ্জার জন্য একাধিক প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্তির নিয়ম থাকলেও মাত্র একটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ‘ইকবাল ক্যাটারিং’ নামে এই প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়ে মুনাফা তুলে নিতেন কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা। বিএনপি নেতারাও ঠিক একই পথে হাঁটছেন। এই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে খাবারের প্লেট প্রতি টাকা নেন বিএনপিপন্থি কৃষিবিদরা। এ ছাড়া  নিয়ম অনুযায়ী অনুষ্ঠানে অতিথিপ্রতি ১০০ টাকা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনকে দিতে হয়। কিন্তু এক হাজার অতিথি উপস্থিত থাকলে দেখানো হয় ৩০০ জন। এর মাধ্যমে এক দিনেই অন্তত ৭০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এই টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিএনপিপন্থি কৃষিবিদদের মধ্যে চলছে বিরোধ। উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেন, এত অনিয়মের পরও তিন-চার মাস ধরে এখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন পাচ্ছেন না। দ্রুত প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে সব অনিয়মের তদন্ত করা হবে।

 

Facebook Comments Box

Posted ৭:৪৯ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৫

dainikbanglarnabokantha.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক

রুমাজ্জল হোসেন রুবেল

বাণিজ্যিক কার্যালয় :

১৪, পুরানা পল্টন, দারুস সালাম আর্কেড, ১১ম তলা, রুম নং-১১-এ, ঢাকা-১০০০।

ফোন: ০১৭১২৮৪৫১৭৬, ০১৬১২-৮৪৫১৮৬, ০২ ৪১০৫০৫৯৮

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

design and development by : webnewsdesign.com

nilüfer escort coin master free spins