শুক্রবার ২১ মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

>>

শিরোনাম: “সুশিক্ষিত-স্বশিক্ষিত জাতিই আমাদের কামনা : পিটিজে. শামসিয়া”

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   মঙ্গলবার, ০৮ নভেম্বর ২০২২   |   প্রিন্ট

শিরোনাম: “সুশিক্ষিত-স্বশিক্ষিত জাতিই আমাদের কামনা : পিটিজে. শামসিয়া”

দেশের প্রতি ভালোবাসা ও মায়ার বন্ধন থেকে ২০১৯ সালের ২৮ শে মে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে পেট্রোরি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু হয়। আশেপাশে চলার পথে ছোটো শিশুদের যখন জীবনের কঠিন সময়ের সাথে পাল্লা দিতে হয়, ঠিক তখনই নিজেদের দায়িত্ববোধে আমরা পেট্রোরি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন সচেতন হয়ে উঠি।
আমাদের উদ্দেশ্য সমাজের সুবিধাবঞ্চিতদের নিয়ে ভালো থাকা। স্বচ্ছল জনগণের মতন তারাও যেনো নিজেদের প্রাপ্য অধিকার থেকে দূরে সরে না যায় সেই লক্ষ্য নিয়েই আমাদের পথচলা শুরু হয়েছিলো। এই ফাউন্ডেশন মূলত নিরক্ষরতা, বেকারত্ব, জরুরি সেবা, পথশিশু, নৈরাজ্য ও নানাবিধ সামাজিক সমস্যা নিয়ে কাজ করে থাকে। এসকল সমস্যা বর্তমান সরকারের অধীনে অনেকটাই স্থিতিশীল হয়েছে। তবে এখনোও তা পুরোপুরি নিবারণ হয়নি। দেশের দায়িত্ব সরকার ও জনগণ উভয়েরই। তাই সেই দায়িত্ববোধ পেট্রোরি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন কখনো অবহেলা করেনি। আমরা তাই নতুন এক উদ্দীপনা নিয়ে দেশের মানুষের সেবায় পথচলা শুরু করি।

শিক্ষা মৌলিক অধিকার। সুশিক্ষিত-স্বশিক্ষিত জাতিই আমাদের কামনা। সেই সচেতনতা থেকে পেট্রোরি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন সমাজের সুবিধাবঞ্চিত ও অস্বচ্ছল পরিবার থেকে আগ্রহী শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিতকরণ করে থাকে। প্রতিনিয়ত শিক্ষা সচেতনতামূলক কন্টেন্ট লিখা, স্কুল কলেজে এ বিষয়ক সেমিনার এর মাধ্যমে আমরা ডোনারদের জন প্রতি শিশুর শিক্ষার দায়িত্ব নিতে উৎসাহ প্রেরণ করে থাকি। এছাড়াও ফাউন্ডেশন থেকে পথশিশুদের নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম এর আয়োজন করা হয়। পেট্রোরি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের সদস্যরা এই শিশুদের লিখতে, পড়তে ও শিখতে সহযোগিতা করে থাকে। আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এই ছোট্টবন্ধুদের নিয়ে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেওয়ার। সেই লক্ষ্য পূরণে বরিশালে সম্প্রতি উন্মুক্ত বিদ্যালয় শুরু করা হয়। শিক্ষার আলো সর্বস্তরে সর্বসাধারণের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা অগ্রসর হচ্ছি।

শিক্ষার পাশাপাশি সামাজিক অন্যান্য প্রয়োজন ও সেবায় পেট্রোরি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন নিয়োজিত। মানুষকে ভালো কাজের সুযোগ করে দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। যেমন রক্তদান একটি মহৎ গুণ। পরিস্থিতির কারণে কখনো কখনো রক্তদানে ব্যাঘাত ঘটে। এই প্রয়োজন বিবেচনা করে আমাদের ফাউন্ডেশন থেকে ব্লাড ব্যাংক এর যাত্রা শুরু হয়। আমরা সর্বদা চেষ্টা করি সময়মত রোগীর নিকট রক্ত পৌঁছে দিতে। জনগনকে রক্তদানে উৎসাহ ও সাহস দেওয়া পেট্রোরি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের মূল লক্ষ্য।

ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগের একটি বড় মাধ্যম। আমরা চেষ্টা করেছি ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে আমাদের কার্যক্রম মানুষের কাছে তুলে ধরার। এ পর্যায়ে কয়েকটি লাইভ করতে সফল হয়েছি। শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত লাইভে কেবল পড়াশোনা কেন্দ্রীভূত নয় বরং মানসিক প্রশান্তি এবং মনোবিজ্ঞান বিষয়ক লাইভ এর আয়োজন করা হয়েছে। এ বছর ব্রেস্টফিডিং নিয়ে সামাজিক সচেতনতামূলক লাইভ হয়। জনগণের মাঝে মা ও শিশুর জন্য মাতৃদুগ্ধের প্রয়োজনীয়তা এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

অতিরিক্ত বৃষ্টির জন্য সিলেট শহরের সেসময়ের অবস্থা করুণ! শিশু, বৃদ্ধ, শিক্ষার্থী, অন্তঃসত্ত্বা মা, ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবী সবার জীবন অনিশ্চিত। সাময়িক কারণে এস.এস.সি’২২ এর পরীক্ষা স্থগিত হলেও আশংকা আর হাহাকার প্রতিনিয়ত। বন্যার পানিতে মানুষগুলোর স্বপ্ন বিলীন। সেখানের বাড়িঘর, জীবন জীবিকা সবই যেনো এক কঠিন পরীক্ষা! এদের কেউ আমাদের প্রতিবেশী, আমাদের বন্ধু, আমাদের স্বজন। দেশবাসীর এই চরম হতাশায় আমি আমরা চেয়েছিলাম আশার আলো হতে। তাই পেট্রোরি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের পক্ষ হতে সিলেট এর জন্য উদ্যোগ নিয়ে আমরা এই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছিলাম।

এছাড়াও শীতবস্ত্র বিতরণ পেট্রোরি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের সবচাইতে আনন্দের একটি কার্যক্রম। ইদ মানেই আনন্দ। তবে এই আনন্দ একার কারো নয়। পরিবার, প্রতিবেশী, দুস্থ সবাইকে নিয়েই হোক ইদের আয়োজন। বিগত দু’বছরের ইদে ছিলো অনেক বারণ আর নিয়মকানুন। সব নিয়মকানুন মেনে আমরা চেষ্টা করেছি আমাদের অসহায় বন্ধুদের পাশে থাকার। কিছু ছোটো উপহারে তাদের মন কেড়ে নেওয়াতেই যেনো ইদের আনন্দ। এই ইদেও পেট্রোরি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ইদ উপহার বিতরণ হয়েছে সমাজের সেইসব মানুষের কাছে যাদের এই আনন্দটুকু খুব প্রয়োজন। তাদের মুখে হাসির আমেজ ইদ কে করে আরও উচ্ছ্বসিত, আনন্দিত।

করোনা কালীন ভয়াবহ সময়ের কথায় আজও শিহরিত হই। কত মানুষের ভাইরাস এর ভয় থেকেও ক্ষুধা নিবারণের ভয় ছিলো। মহামারীর কঠিন সময়েও এই ফাউন্ডেশন সমাজের দুস্থ মানুষের হাতে হাত মিলিয়ে তাদের বাঁচার সাহস দিয়েছে। দিনশেষে আমাদের প্রাপ্তি অসহায়ত্ব গ্রাস করে থাকা মানুষের হাসিমুখ। কষ্ট নিবারণে পাশে থাকতে পারাই যেনো আমাদের সাফল্য।

যেকোনো দুর্যোগ অথবা বড় কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা চেষ্টা করেছি জনগণের সাথে থাকার এবং সে পরিস্থিতি হতে উদ্ধার করার। সামাজিক যেকোনো সমস্যাকে অবহেলা না করে প্রকৃত সমাধানের সন্ধানে পেট্রোরি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন সদাসর্বদা নিয়োজিত থাকবে। দেশ ও জনগণের শুভাকাঙ্ক্ষী হয়ে কাজ করার সুযোগ যেনো তরুণ সমাজ পায় এবং দেশের সেবা করে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যায় এটিই এই ফাউন্ডেশন এর উদ্দেশ্য।
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য বলেছেন,
“তব আঠারোর শুনেছি জয়ধ্বনি,
এ বয়স বাঁচে দুর্যোগে আর ঝড়ে,
বিপদের মুখে এ বয়স অগ্রণী
এ বয়স তবু নতুন কিছু তো করে।”

যুবসমাজকে দক্ষ ও সচেতন জনশক্তিতে পরিণত করা ও নতুন উদ্যোগে মানুষের সেবায় নিয়োজিত করাই পেট্রোরি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের মূল পরিকল্পনা।
আজকের তরুণ প্রজন্ম আগামীর ভবিষ্যৎ। আমাদের উদ্দেশ্য তারুণ্যের আলোয় যেনো দেশ ও জনগণ আলোকিত হয়। দায়িত্বশীল ও দক্ষ জনশক্তিই এই সংস্থার কামনা। কোনো শিশু পথে না থাকুক, শিশু শ্রমের বোঝা যেনো আর কোনো শিশুকে বইতে না হয়, সমাজের সুবিধাবঞ্চিত, অসহায় সবাই যেনো তাদের নিজ অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়। পরিশেষে দেশের মানুষের মঙ্গল কামনা করাই আমাদের ব্রত।

পেট্রোজুনিয়র শামসিয়া মাহজাবিন,
দলনেতা

Facebook Comments Box

Posted ৯:২৯ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৮ নভেম্বর ২০২২

dainikbanglarnabokantha.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক

রুমাজ্জল হোসেন রুবেল

বাণিজ্যিক কার্যালয় :

১৪, পুরানা পল্টন, দারুস সালাম আর্কেড, ১১ম তলা, রুম নং-১১-এ, ঢাকা-১০০০।

ফোন: ০১৭১২৮৪৫১৭৬, ০১৬১২-৮৪৫১৮৬, ০২ ৪১০৫০৫৯৮

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

design and development by : webnewsdesign.com

nilüfer escort coin master free spins