মিজানুর রহমান, মোস্তফা,শরীয়তপুর প্রতিনিধি : | মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ | পড়া হয়েছে 27 বার
শরীয়তপুর সদর উপজেলায় হাতে হাতকড়া আর পায়ে ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় গভীর রাতে আধা ঘন্টার জন্য মায়ের জানাজায় অংশ নেয় সেলিম রেজা নামে ছাত্রদলের এক কেন্দ্রীয় নেতা। মায়ের মৃত্যুতে কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে জানাযায় অংশ নেওয়ার পর হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি থাকার কারনে অযু, কবওে মাটি দেওয়া সহ কোন কাজ করতে পারেনি। আজ মঙ্গলবার সকালে সেলিম রেজার বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায় পরিবারে কুলখানি অনুষ্ঠান হচ্ছে। ১০ ঘন্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি দিলেও সে তার বাড়ীতে সময় পেয়েছে মাত্র ২০ মিনিট , যার ফলে স্বজনদেও ক্ষোভ কাটেনি ।
গত রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে শরীয়তপুর সদর উপজেলার সুজন দোয়াল গ্রামে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর স্থানীয় মসজিদের কবরস্থানে তাঁর মাকে দাফন করা হয়।
মায়ের দাফনের সময় হাতকড়া আর পায়ে ডান্ডাবেড়ি থাকায় খোলা হাত দিয়ে কবরে মাটি দিতে পারেননি তিনি।
ছাত্রদল নেতা সেলিম রেজার পরিবারের সদস্যরা জানান, শরীয়তপুর সদর উপজেলার আনোয়ার হোসেন মুন্সির ছেলে সেলিম রেজা ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক। গত ৭ ডিসেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পুলিশ তাঁকে আটক করে। এরপর ১০ ডিসেম্বর পল্টন থানার নাশকতার একটি মামলায় সেলিম রেজাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি গাজীপুরের কাশিমপুরে কেন্দ্রীয় কারাগারের রয়েছেন।
পরিবারের সদস্যরা আরো জানান, রোববার সকালে সেলিম রেজার মা নাছিমা বেগম গ্রামের বাড়িতে মারা যান। এরপর আইনজীবীর মাধ্যমে সেলিম রেজার প্যারোল মুক্তির জন্য ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করা হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেলিম রেজাকে বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ১০ ঘণ্টার জন্য প্যারল মুক্তি দেওয়া হয়।
গাজীপুর জেলা পুলিশ সেলিম রেজাকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পড়িয়ে শরীয়তপুরের সুজন দোয়াল গ্রামে নিয়ে আসেন। সেখানে তাঁর মায়ের মরদেহ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন স্বজনেরা। রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে একই এলাকার সমজিদ মাঠে জানাজায় অংশ নেন তিনি। পরিবারের সদস্য ও স্বজনেরা রাত তিনটার দিকে তাঁর মায়ের দাফন করেন। জানাজ ও দাফনের পুরো সময়ে সেলিম রেজাকে হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখে পুলিশ।
শরীয়তপুর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের এক কর্মী শাজাহান মিয়া বলেন, একজন সন্তান রাজনীতি করার অপরাধে হাত–পা বাঁধা অবস্থায় তাঁর মায়ের জানাজায় অংশ নিতে হয়েছে। এর চেয়ে দুঃখের আর কষ্টের কী হতে পারে। মায়ের কবরে মাটিও দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্যারোল মুক্তি দেওয়ার পর কারা কর্তৃপক্ষের থেকে পুলিশের জিম্মায় আসামিকে আনতে হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে আসামিকে হাতকড়া পরানো হয়েছিল। গাজীপুর জেলা পুলিশ তাদের জিম্মায় আসামি নিয়ে শরীয়তপুরে আসেন। পালং মডেল থানা–পুলিশ তাঁদের সহায়তা দিয়েছে মাত্র।
সেলিম রেজার ভাই শামীম মুন্সি বলেন, সেলিম ঢাকার দনিয়াতে একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। রাজনীতি করে। ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশের আগে গণহারে পুলিশ নেতা-কর্মীদের আটক করেছে। সেলিমকেও আটক করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১:১১ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৩
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel