বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীদের প্রায় অর্ধেকেরও বেশি গ্রামের মানুষ। হাসপাতালে আসা অধিকাংশ রোগীর অবস্থাই নাজুক। করোনার তীব্রতার মাত্রা বেশি হলেই হাসপাতালে আসছেন এসব রোগীরা। সারা দেশে আক্রান্তের হার প্রায় ৩০ শতাংশ। রাজশাহীসহ কোন কোন জেলায় এর থেকেও অনেক বেশি। যা কিনা রীতিমতো ভয়ংকর! এমন পরিস্থিতিতে গ্রামের অরক্ষিত এসব মানুষদের সুরক্ষা দিতে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শহীদ জামিল ব্রিগেড। ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশার পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা এই সংগঠনটি একদিকে যেমন বিনামূল্যে গ্রামের মানুষের কাছে অক্সিজেন-অ্যাম্বুলেন্স সেবা পৌঁছে দিচ্ছে; অপরদিকে তাদের মাঝে মাস্ক পরার প্রবণতাকে বৃদ্ধি করতে প্রতিদিনই চালাচ্ছে সচেনতামূলক প্রচারাভিযান। প্রতিদিনের মতো আজ সোমবার(২ আগস্ট)সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ইউনিয়নের রাজাবাড়ী হাটে ব্রিগেডের জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন সমন্বয়কারীদের নেতৃত্বে একদল কর্মী সাধারণ মানুষের মাঝে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করেছেন।
এসময় কোনমতেই মাস্ক না পড়ে বাইরে বের না হওয়ার বিষয়ে মানুষকে নিরুৎসাহিত করে যাদের মুখে মাস্ক নেই, তাদের মাস্কও পড়িয়ে দেন বিগ্রেডের সদস্যরা। কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী জেলার সভাপতি রফিকুল ইসলাম পিয়ারুল ও সাধারণ সম্পাদক জামিল ব্রিগেডের জেলার সমন্বয়কারী অধ্যাপক আশরাফুল হক তোতা। গ্রামের মানুষের জন্য এসব উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শহরের মানুষের তূলনায় গ্রামের মানুষের মধ্যে করোনা সচেতনতা অনেকটাই কম।
তারা মাস্ক যেমন পরছেন না, করোনার লক্ষণ তীব্র না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষাও করাচ্ছেন না। মানে তাদের অজান্তেই তারা এক প্রকার ভয়ংকার পরিস্থিতি তৈরী করে ফেলেছেন। তোতা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ব্রিগেডের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ফজলে হোসেন বাদশার নির্দেশনায় জেলার আটটি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় বিনামূল্যে অক্সিজেন-অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করেছি। প্রায় প্রতিদিনই ফোন আসছে। আমরা যত কম সময়ের মধ্যে সম্ভব এগুলো তাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। এর জন্য তাদের একটি টাকাও ব্যয় করতে হচ্ছে না। একইসাথে তাদের সচেতন করতে প্রতিদিনই আমরা বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছি। এসময় উপস্থিত ছিলেন- শহীদ জামিল ব্রিগেডের জেলার মনিটরিং সেলের সদস্য বিমল চন্দ্র রাজোয়াড়, কামরুল হাসান সুমন, মোশাররফ হোসেন, সদস্য আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, গোগ্রাম ইউনিয়নের সমন্বয়কারী মনিরুল ইসলাম, মাটিকাটা ইউনিয়নের সমন্বয়কারী রানাউর রহমান হিমু, সদস্য জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র রাজশাহী শহরে কোভিড মোকাবিলায় গত (৫ জুন) ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃত্বাধীন ৫০ জন তরুণ-যুবকদের সমন্বয়ে শহীদ জামিল ব্রিগেড গঠন করা হয়। প্রায় দুই মাস ধরে মহানগর এলাকায় শুধুমাত্র একটি ফোনকলে মানুষের বাড়িতে অ্যাম্বুলেন্স ও অক্সিজেন পৌঁছে দিয়ে মানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছে জামিল ব্রিগেডের সদস্যরা। সম্প্রতি জেলার গ্রাম পর্যায়ে ব্যাপক হারে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে গেলে ব্রিগেডের সেবা প্রসারিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গত (১৫ জুলাই) গ্রামের মানুষের জন্য বিনামূল্যে আরও একটি অ্যাম্বুলেন্সের উদ্বোধন করেন ব্রিগেড কর্তৃপক্ষ। সাথে যুক্ত করা হয় ফ্রি অক্সিজেন সেবাও। এখন প্রায় প্রতিদিন রাজশাহী নগর ও জেলায় অক্সিজেন-অ্যাম্বুলেন্স সেবা এবং বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ কর্মসূচি পরিচালনা করে যাচ্ছে শহীদ জামিল ব্রিগেড।