ধসে পড়ার ঝুঁকিতে ভালুকা সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়। প্রতি মাসে প্রায় ১ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের উৎস ময়মনসিংহের ভালুকা সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের ভবনটি। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় যে কোন মুহুর্তে ধসে পড়তে পারে। কার্যালয়ের দেয়ালের বিভিন্ন অংশে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে।
বেশ কয়েকটি স্থানে ছাদ থেকে আস্তর খসে পড়ে লোহার রড বেড়িয়ে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে বর্তমানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের বর্তমান কার্যক্রম। খুব দ্রুত সময়ের মাঝে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা না করা হলে যে কোনো মুহুর্তে ভবনটি ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনাসহ রাষ্ট্রীয় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন সাবরেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখকসহ সেবা নিতে আসা মানুষ। সরেজমিন দেখা যায়, সাবরেজিস্ট্রি অফিসের ছাদের কয়েকটি স্থানে ঢালাইয়ের রড বের হয়ে গেছে। কার্যালয়টির দেয়ালে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল। ছাদের বিমেও ফাটল ধরেছে। সিলিং ফ্যানের হুকগুলো মরিচা ধরে নষ্ট প্রায়।
ভবনের অনেক স্থানে মেঝের ঢালাই উঠে গেছে। বিদ্যুৎ লাইনও ঝুঁকিপূর্ণ। বর্ষার সময় বৃষ্টির পানি ও শীতের সময় ছাদের ভিতর দিয়ে পানি চুয়ে পড়ে। বৃষ্টি শুরু হলে টেবিলের ওপর পলিথিন ও ছাতা দিয়ে রক্ষা করা হয় প্রয়োজনীয় দলিল-দস্তাবেজ। এসবের মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দলিল লেখক ও ভূমি ক্রেতা-বিক্রেতাদেরও দিন কাটছে দুর্ঘটনার আশঙ্কায়। জানা যায়, ১৯৮৮ সালের ২২ ডিসেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উপরাষ্ট্রপতি বিচারপতি এ কে এম নূরুল ইসলাম এ ভবন উদ্বোধন করেন। তারপর থেকে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে ভবনটি।
হবিরবাড়ি ইউনিয়নের মফিজুল আলম আসেন জমি ক্রয়ের দলিল করতে। তিনি বলেন, মাঝে মাঝে আসতে হয় রেজিস্ট্রি অফিসে।
ভবনের ভিতরে বেশিক্ষণ থাকলে ভয় লাগে। অনেক দিন ধরে রেজিস্ট্রি অফিসের এ অবস্থা। দেখে মনে হয় এই বুঝি পলেস্তারা খসে পড়ল! তাছাড়া যেভাবে ভূমিকম্প হচ্ছে যে কোনো সময় এ ভবনটি ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দলিল লেখক শফিকুল ইসলাম জানান, ‘অফিসটির অবস্থা খুবই নাজুক। যে কোনো মুহুর্তে ধসে পড়তে পারে। বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আগেই দ্রুত সংশ্লিষ্ট দফতরের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। এমপি মহোদয় ডিও লেটার প্রদান করেছে, সংসদেও উপস্থাপন করেছে। আমরা আশা করছি এমপি মহোদয়ের হস্তক্ষেপে দ্রুত আমরা ভবন পাব। সাবরেজিস্ট্রার মো. বোরহান উদ্দিন সরকার জানান, ‘ভবনটি দ্রুত পরিত্যক্ত ঘোষণা করে পুনর্নির্মাণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ দফতর থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হলেও আমাদের এ আতঙ্কের কথা কেউ শুনছে না। এ এলাকায় একটি ভূমিকম্প হলেই ভবনটি ধসে পড়বে। অফিসে যতক্ষণ থাকি ভয়ে থাকি। বজ্রপাত হলে অফিসের বাইরে চলে যাই। স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ কাজিম উদ্দিন আহাম্মেদ ধনু জানান, ‘জরুরি ভিত্তিতে নতুন ভবন নির্মাণ করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে ডিও লেটার প্রদান করা হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত ভবনটি নির্মাণ করা সম্ভব হবে।