জেলা প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ | রবিবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ | পড়া হয়েছে 47 বার
সারাদিন ঘুরে ঘুরে কলার মোচা, ভাদাল (কান্দাল) ও শাক সংগ্রহ করতেন পাবনার চাটমোহর উপজেলার রাহেলা খাতুন (৬৫)। সংগ্রহ করা সেই শাক-সবজি বিক্রি করতে এই তীব্র শীতেও পাবনা থেকে খোলা ট্রাকে সপ্তাহে দুই দিন সিরাজগঞ্জে আসতেন। গভীর রাতে খোলা ট্রাকে বসে ভোরে পৌঁছাতেন সিরাজগঞ্জ শহরে। সেগুলো বিক্রি করে যে টাকা উপার্জন করতেন তাই দিয়ে কোনো মতে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি।
বিষয়টি দ্য বার্ড সেফটি হাউসের চেয়ারম্যান সমাজকর্মী মামুন বিশ্বাসের নজরে আসায় রাহেলার ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে। ফেসবুকের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করে তাকে স্বাবলম্বী করতে গরু কিনে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নগদ টাকাসহ জীবিকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাহেলা খাতুন চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ের চড়ইকোল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাহেলার স্বামী প্রায় ৮-১০ বছর আগে তাকে ফেলে চলে গেছেন। অন্যত্র বিয়ে করে সেখানেই পেতেছেন সংসার। একমাত্র ছেলে-মেয়েও বিয়ে করে আলাদা হয়ে গেছেন। তার খোঁজ কেউ রাখেন না। বাধ্য হয়েই রাহেলার এই জীবন সংগ্রাম।
দ্য বার্ড সেফটি হাউসের চেয়ারম্যান সমাজকর্মী মামুন বিশ্বাস বলেন, রাহেলা খাতুনের এই কষ্টের বিষয়টি আমার নজরে আসে। এরপর আমি ফেসবুকে রাহেলা খাতুনের কষ্টের গল্পের একটি ভিডিও পোস্ট করি। ফেসবুকের মাধ্যমে মানবিক ব্যক্তিদের পাঠানো ৭৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করি। সেই টাকা দিয়েই একটি গরু, নতুন জামা-কাপড়, খাদ্যসামগ্রী কিনি এবং বাকি নগদ ১৪ হাজার টাকাসহ শনিবার সকালে রাহেলা খাতুনের বাড়িয়ে গিয়ে তার হাতে তুলে দেই।
তিনি আরও বলেন, এসব পেয়ে রাহেলা খাতুনকে আর সীমাহীন কষ্ট করতে হবে না। রাত জেগে আর পাবনা থেকে আসতে হবে না সিরাজগঞ্জে। কষ্ট লাঘব হলো রাহেলা খাতুনের। তিনি এখন স্বাবলম্বী হবেন।
মামুন বিশ্বাস বলেন, ধন্যবাদ যারা রাহেলা খালার পাশে দাঁড়িয়েছেন। দীর্ঘদিনের কষ্ট থেকে মুক্তি পেলেন রাহেলা খাতুন। এর কৃতিত্ব ফেসবুক বন্ধুদের, এই কৃতিত্ব আপনাদের সবার। আমি শুধু চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি মাত্র।
উপহার সামগ্রী তুলে দেওয়ার সময় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী পবিত্র কুমার তালুকদারসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১:১১ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৫ জানুয়ারি ২০২৩
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel