স্টাফ রিপোর্টারঃ | বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট
সাবেক মন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর এর সন্তান যমুনা ব্যাংকের পরিচালক গাজী গোলাম আশরিয়া ও গাজী গোলাম মূর্তজা ২০১৬ সাল থেকে আইটি সামগ্রী সরবরাহের নামে বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাৎ করেছে এই অভিযোগে তদন্তে নেমেছে দূর্নীতি দমন কমিশন। বিশেষ করে ২০২৩ সালের ১৩ আগস্ট এর বোর্ড মিটিং এ আইটি বিভাগের ১৫ কোটি টাকা মূল্যের হার্ডওয়ার সামগ্রী ৮০-৯০ কোটি টাকায় ক্রয়ের নিমিত্তে জোরপূর্বক পাশ করিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। উক্ত বোর্ড মিটিং এ সভাপতিত্ব করেন সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এর পূত্র মো. সাইদুল ইসলাম। অতিরিক্ত মূল্য দেখিয়ে ঐ সভায় আইটি সামগ্রী পাশ করানোর সাথে যমুনা ব্যাংকের পরিচালক রেদোয়ান কবির আনসারী,পরিচালক রেদোয়ান করিম আনসারী, পরিচালক রবিন রাজন সাখাওয়াত, এবং আইটি বিভাগের প্রধান জাহিদ জড়িত ছিলো বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০২৩ সালের আগস্ট মাসের ১৪ তারিখ উপরোক্ত অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত পূর্বক মতামতসহ প্রতিবেদন প্রেরনের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন যমুনা ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মির্জা ইলিয়াছ এর নিকট চিঠি প্রদান করে।
অভিযোগ রয়েছে যমুনা ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মির্জা ইলিয়াছ পরিচালক উত্তম কুমার মন্ডল স্বাক্ষরিত চিঠির উত্তর না দিয়ে মন্ত্রীদের প্রভাব খাটিয়ে দুদকের পদক্ষেপ বন্ধ করে দেয় যমুনা ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মির্জা ইলিয়াস । দুদকের প্রথম পদক্ষেপ বন্ধ হয়ে যায়।
আইটি সামগ্রী ক্রয়ের অভিযোগের ব্যাপারে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ন পরিচালক স্বাক্ষরিত চিঠি দুর্নীতি দমন কমিশনে গেলে পূনরায় এটি আলোচনায় আসে। এই চিঠির প্রেক্ষিতে এই মাসের ৫ তারিখ দূর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক (মানি লন্ডারিং) কে কমিশনের ব্যাংক শাখা হতে অনুসন্ধান পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহনের নির্দেশনা প্রদান করেছে। বর্তমানে সাবেক মন্ত্রীপূত্র সাইদুল ইসলাম দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে গেছে বলে জানা যায়।
প্রথমবারে দুদকের তদন্ত বন্ধ হওয়ার বিষয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা যায়,
যমুনা ব্যাংকের বর্তমান এমডি মির্জা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ শিক্ষাজীবনে তৃতীয় বিভাগ বা শ্রেণিপ্রাপ্ত। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অমান্য করে তাকে নতুন করে আরও পাঁচ বছরের জন্য এমডি হিসেবে পুনর্নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এর পেছনে হাত ছিলো সাবেক মন্ত্রীপূত্রদের। আইটি সামগ্রী ক্রয়ের দূর্নীতিসহ সকল প্রকার অনিয়ম দূর্নীতির ভাগ পেতো মির্জা ইলিয়াছ। এদিকে তার পরিচালিত ব্যাংক হিসাবে আর্থিক অনিয়ম পায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন দল। প্রতিবেদন পর্যালোচনা দেখা যায়, যমুনা ব্যাংকের এমডির বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ব্যাংকটির দিলকুশা শাখায় একটি হিসাব পরিচালিত হয়, যার হিসাব নং-১১০২০০০০১৫৮৯৯। এতে ২০২২ সালের ১৬ আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বেতন-ভাতা ও অপরাপর সুবিধার অর্থ হিসাবটিতে জমা হওয়ার পাশাপাশি নগদ এবং অন্য ব্যাংক থেকে অনলাইন ট্রান্সফারের মাধ্যমে প্রায় ৬৭ লাখ ৫৮ হাজার টাকা জমা হয়েছে। তবে এ অর্থের কোনো উৎস খুঁজে পায়নি বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দল। নগদ জমা ও অন্য ব্যাংক হতে অনলাইন ট্রান্সফারের ভাউচারগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানোর জন্য বলা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্দেশনা থাকার পরও নগদ জমা ও অনলাইন ট্রান্সফারের কোনো ভাউচার বাংলাদেশ ব্যাংকে সরবরাহ করেনি ব্যাংকটি।
এ বিষয়ে জানতে যমুনা ব্যাংকের এমডি মির্জা ইলিয়াছকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরবর্তী সময়ে অনিয়মের বিষয়ে উল্লেখ করে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করা হলেও কোনো সাড়া দেননি।
Posted ৬:৩৪ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।