রফিক খান, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: | রবিবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২১ | প্রিন্ট
রফিক খান, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি:
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার নালী ইউনিয়নের হেলাচিয়া বাজার হতে পূবপাড়া পর্যন্ত ৭০০ মিটার এলজিইডির গ্রামীন রাস্তায় ৭১-এর পর থেকে উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি। এত বছরেও রাস্তাটি ভরাটে কোন কর্মসূচি আসেনি। শুকনো মৌসুমেও কোন যানবাহন চলাচল করতে পারে না। একমাত্র উপায় পায়ে হেটে যাওয়া। বর্ষাকাল এলে হেলাচিয়া বরুনা খাল দিয়ে নৌকা যোগে চলাচল করা যায়। তবে খালে কচুরি পানা থাকলে চলাচলে ব্যঘাত ঘটে। স্থানীয়দের কৃষিপণ্য আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। প্রত্যেহ সিমাহীন দূর্ভোগ নিয়ে চলাচল করতে হয় স্থানীয় জনগণের।
উপজেলার শেষ সীমানায় অবস্থিত হেলাচিয়া, কল্যাণপুর, বরুনা, জয়নগর, চানপুর গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র পথ হওয়ায় চলাচলে ভোগান্তির অন্ত নেই এ অঞ্চলের মানুষের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এখন শুকনো মৌসুম তাই রাস্তায় থাকা পানি শুকিয়ে গেছে।তাই পায়ে হেটে চলাচল করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। কোন যানবাহন নিয়ে চলাচল করা যায় না। যে কোন মালপত্র আনা নেওয়া করতে পড়তে হয় সিমাহীন দূর্ভোগে। বৃষ্টি হলে এই রাস্তায় হাটু কাঁদা সৃষ্টি হয়। হেলাচিয়া বাজার ঘেষে একটি খাল চলে গেছে বালিরটেক কালিগঙ্গা নদীতে। সেই খালের পাড় দিয়ে ৭০০ মিটার এলজিইডির একটি গ্রামিণ রাস্তা চলে গেছে বরুনা গ্রামের দিকে। এই গ্রামীণ রাস্তাটিতে উন্নয়নের কোন ছোয়া লাগেনি। চলাচলের জন্য গ্রামের মানুষেরা রাস্তা ঠিক করে নেন। যার কারণে বর্ষাকালে এই রাস্তা দিয়ে মানুষ চলাচল করা যেমন কষ্টসাধ্য তেমনি কৃষি নির্ভর এই অঞ্চলের কৃষকদের আরো চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। এই খারাপ রাস্তার জন্য কৃষি অধ্যষিত এই অঞ্চলে উৎপাদিত ধান, সবজিসহ অন্যান্য কৃষি উপকরনগুলো কৃষকরা সহজেই বাজারজাত করতে পারে না। তাই এই গ্রামগুলোর কৃষকরা দীর্ঘদিন যাবত কৃষি পণ্যের নায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। যেখানে সরকার শহরের সুবিধা গ্রামে পৌছে দেওয়ার লক্ষ্যে বধ্য পরিকর সেখানে ৭১-এর পর থেকে এলজিইডির গ্রামীণ এই মেঠোপথে মাটি দিয়ে ভরাট, ইট কিংবা পাকাকরণের কোন ছোঁয়া আজও লাগেনি। আধুনিক রাস্তার সুযোগ-সুবিধা থেকে বছরের পর বছর বঞ্চিত হয়ে আসছে এই ৫টি গ্রামের প্রায় ১৫হাজার মানুষ।
হাকিম মিয়া বলেন দেশ স্বাধীনের পর থেকে মাটির এই রাস্তায় আজ পর্যন্ত পাকাকরণ তো দূরের কথা কেউ এক ডালি বালি অথবা একটি ইট পর্যন্ত পেড়ে দেয়নি। শুকনো মৌসুমে চলাচল করতে পারলেও বর্ষাকালে পুরো রাস্তায় পানিতে পরিপূর্ন হওয়ার কারণে একজন মানুষও সহজেই চলাচল করতে পারে না। এজন্য ছেলে-মেয়েরা স্কুল-কলেজেও যেতে চায় না।রাস্তাটি বর্তমানে ৫টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের গলার কাটায় পরিণত হয়েছে। তবুও কারো সুদৃষ্টি নেই এই রাস্তার দিকে।
স্থানীয় সাইফুল ইসলাম (পলাশ) বলেন, এই রাস্তার কারণে ঝিমিয়ে পড়েছে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক চাকা। কারণ একটি অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা যদি ভালো না হয় সেই অঞ্চলের মানুষদের জীবনমানে কখনোই উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে না।
নালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস মধু বলেন, রাস্তাটি সংস্কার হওয়া খুব দরকার। ওই এলাকার লোকজন আমার কাছে এসেছিল তাদের সাথে আলোচনা হয়েছে। এই রাস্তাটি দিয়ে এ্ই ইউনিয়নের বাহিরের মানুষ বেশি চলাচল করে এজন্য পূর্বের চেয়ারম্যান মেম্বাররা কোন কাজ করেনি বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন ওই এলাকার লোকজন সহযোগিতা করলে আমরা রাস্তাটি নির্মান করার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব।
ঘিওর উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী সাজ্জাকুর রহমান জানান, রাস্তাটি যদি আমাদের আওতাধীন হয় আমরা খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Posted ৫:৩৪ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২১
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।