কুমিল্লাসহ সারাদেশে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলা-ভাংচুরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানিকগঞ্জ প্রতিবাদী বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সহ প্রগতিশীল গণসংগঠনের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বেলা ১১টায় মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আবুল ইসলাম সিকদারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কৃষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আজহারুল ইসলাম আরজু, সিপিবির জেলা কমিটি সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন মানিকগঞ্জ জেলা সংসদের সভাপতি এম আর লিটন, যুব ইউনিয়ন জেলা শাখার সভাপতি আসাদুজ্জামান সেন্টু, কৃষক সমিতির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেতোয়ার হোসেন খান, ক্ষেতমজুর সমিতির জেলা কমিটির সভাপতি আব্দুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক আশরাফ সিদ্দিকী, খেলাঘর বায়রা শাখার সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক প্রদীব হালদার, প্রগতি লেখক সংঘ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন কমিউনিস্ট পার্টি জেলা কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক আরশের আলী। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, কুমিল্লায় কথিত কোরানের অবমাননা করার অজুহাতে পূঁজা মন্ডপে হামলা করা হয়েছে। এ ঘটনার জেরে চাঁদপুরের হাজিগঞ্জে তৌহিদী জনতার নামে মিছিল করে মন্ডপে হামলা, ভাংচুর ও সেখানে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, হাতিয়ায় এবং বাঁশখালীসহ সারা দেশেই এবং বান্দরবানসহ বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনা ঘটেছে যা পূর্ব পরিকল্পিত ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। বক্তারা আরো বলেনে, বংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ এখানে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খৃষ্টান সব ধর্মের ও জাতির মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। ধর্মভিত্তিক পাকিস্তান রাষ্ট্রের সাথে ছেদ ঘটিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছে। কিন্তু বর্তমান সরকারসহ স্বাধীনতা উত্তর গত ৫০ বছরে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন সকল সরকারই ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক শক্তির সাথে আপোষ আঁতাত করে ক্ষমতায় থাকা বা ক্ষমতায় যাওয়ার নির্লজ্জ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনাকে বিসর্জন দিয়েছে। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, কুমিল্লাসহ সারাদেশে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার-বিচারের দাবি জানান। একই সাথে ধর্মান্ধ-সাম্প্রদায়িক অপশক্তি ও শাসকশ্রেণির সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা, দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি রোধ ও গণতন্ত্র-ভোটাধিতার প্রতিষ্ঠার জন্য সকল বাম প্রগতিশীর গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল-ব্যক্তি-গোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানান। সমাবেশ শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল শহীদ রফিক সড়ক প্রদক্ষিণ করে।