
| বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪ | প্রিন্ট
কুমিল্লা জেলার কৃতি সন্তান পুলিশ সুপার জনাব মোঃ নাইমুল হক (পিপিএম), ১৯৭৮ সালে ৩০ শে নভেম্বর মুরাদনগর থানার বাইরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা জনাব মোঃ শহিদুল হক (বীর মুক্তিযোদ্ধা), মা গৃহীনি। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্স ও মাষ্টার্স, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বাস্থ্য অর্থনীতিতে মাষ্টার্স এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ (এইচ.আর.এম) ডিগ্রী লাভ করেন। জনাব মোঃ নাইমুল হক (পিপিএম) ২০০৬ সালে ২৫তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে পুলিশ ক্যাডারে যোগদান করেন। তার চাকুরী জীবন বর্ণাঢ্য এবং বৈচিত্র্যময়। সারদা পুলিশ একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করে ঢাকা জেলায় বাস্তব প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি বান্দরবন পার্বত্য জেলা, প্রধান মন্ত্রীর বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (এসএসএফ), যশোর, সিলেট, ঠাকুরগাঁও, খুলনা, বরিশাল, কক্সবাজার, খাগড়াছড়িতে সাফল্যের সাথে কর্ম সম্পাদন করেন। বর্তমানে তিনি ট্যুরিস্ট পুলিশের ঢাকা রিজিয়নের পুলিশ সুপার। তার নেতৃত্বে ট্যুরিস্ট পুলিশ ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী,মানিকগঞ্জ এবং টাঙ্গাইল জেলায় যথেষ্ঠ প্রশংসার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। ভ্রমণ স্পটগুলোতে পর্যটকরা কাঙ্খিত পুলিশের সেবা পাচ্ছে যার কারণে বর্তমানে প্রচুর পরিমানে রিসোর্ট-হোটেল-রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে এবং পর্যটক বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের পর্যটনমুখী করে তোলা এবং সচেতন করার জন্য বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘স্টুডেন্ট ট্যুরিজম সিকিউরিটি” নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তবে আন্তরিক প্রচেষ্টায় পর্যটন খাত নতুন জীবন পেয়েছে।
তিনি ২০২১-২০২২ সালে কক্সবাজারের রোহিঙ্গ ক্যাম্পে দায়িত্বে নিয়োজিত হন। ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) হিসেবে যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দেন। তার কর্মকান্ড দেশে-বিদেশে আন্তর্জাতিকভাবে যথেষ্ট প্রশংসিত হয়। বিশেষ করে রোহিঙ্গা নেতা এআরএসপিএস লিডার মুহিবুল্লাহ হত্যাকান্ডের আসামীদের গ্রেফতার এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ব্যাপক সমাদৃত হন এবং বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেন। তার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২২ সালে তাকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার “প্রেসিডেন্ড পদক মেডেল” (পিপিএম) সাহসীকতা পুরস্কার ভূষিত করা হয়। তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা নারী-শিশুদের স্বার্থ নিয়ে ব্যাপক কাজ করেন। তিনি সন্ত্রাসী সংগঠন আরসা, আরএসও, মুন্নাগ্রুপ, ইসলামী মাহাজ, নবী গ্রুপ ইত্যাদির বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে কয়েক হাজার রোহিঙ্গ সন্ত্রাসী গ্রেফতারসহ ব্যাপক পরিমানে ইয়াবা, গাঁজা, বিয়ার ও প্রচুর পরিমানে অস্ত্র উদ্ধার করেন। তিনি রোহিঙ্গ ক্যাম্পে সন্ত্রাস দমনে “লাঠি-বাঁশি-পাটি” তৈরী করে আলোচিত হন। তার এসব কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ তাকে ২০২০ সালে “আইজিপি পদকে” ভূষিত করা হয়। ২০১৬ সালে তিনি জাতিসংঘ মিশনে সাফল্যের সাথে কাজ করেন। তিনি মালিতে শান্তি শৃঙ্খলার রক্ষার কাজ এবং মেডেল প্যারেডে কমান্ডার হিসেবে প্যারেড করে ২০১৬ সালে “জাতিসংঘ” পদকে ভূষিত হন।জনাব মোঃ নাইমুল হক তার চাকুরী জীবনে দেশে-বিদেশে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। বিশেষ করে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীতে যোগ দিয়ে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে কমন্ডো প্রশিক্ষণ “Dignitary Training Course, , ইউনাইটেড কিংডমে সাউথ ওয়েলস্ পুলিশ একাডেমিতে VIP Training গ্রহণ করেন। তাছাড়া ও তিনি ইটালির ক্যারাবিনারী পুলিশ একাডেমিতে FPU Commanders Course সহ থাইল্যান্ড, ভারত, আমেরিকায় বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। একজন ট্যুরিষ্ট হিসেবেও তিনি এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা ও আফ্রিকার বেশ কিছু দেশ ভ্রমণ করেন।
জনাব মোঃ নাইমুল হক পিপিএম বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর একজন গর্বিত সদস্য হিসেবে গর্ববোধ করেন। তিনি মনে করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ও আইজিপি মহোদ্বয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পুলিশ যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রসচিব সব সময়ই পুলিশ বাহিনীকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। তবে পুলিশ বিভাগ এখনো স্বাধীন না হওয়ায় তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেন। পুলিশ বাহিনীকে শতভাগ স্বাধীন করা হলে রাজনীতির বলয় মুক্ত হয়ে জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করতে পারবে বলে তিনি মনে করেন। তাছাড়া সঠিক সেবার জন্য পুলিশের জনবল বৃদ্ধি এবং বৈদিশিক প্রশক্ষণের উপর ও গুরুত্ব আরোপ করেন। তাহলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার একজন দক্ষ সহায়ক হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
Posted ১২:০৪ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪
dainikbanglarnabokantha.com | Fahim Farhan
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।