সোমবার ২১ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

>>

মানবতাবাদী লেখক সাংবাদিক আইয়ূব রানা ফ্যাসিবাদের মিথ্যা রাষ্ট্রবিরোধী মামলায় জর্জড়িত

নিজস্ব প্রতিবেদক:   |   সোমবার, ০৩ মার্চ ২০২৫   |   প্রিন্ট

মানবতাবাদী লেখক সাংবাদিক আইয়ূব রানা ফ্যাসিবাদের মিথ্যা রাষ্ট্রবিরোধী মামলায় জর্জড়িত

ফ্যাসিবাদের শিকার হয়ে মানবতাবাদী লেখক সাংবাদিক আইয়ূব রানা দীর্ঘদিন থেকে রাষ্ট্রবিরোধী মিথ্যা মামলার দায় মাথায় নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। এই মিথ্যা মামলা বহন করতে গিয়ে তাঁর জীবন এখন সমস্যায় জর্জড়িত। আইয়ুব রানার অপরাধ ছিলো, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রীর ঝুট ব্যবসা সিন্ডিকেটের কথা পত্রিকায় তুলে ধরেছিলেন। এছাড়া বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুসের নাম/ছবি পত্রিকায় “বাংলাদেশ – মায়ানমার সম্পর্ক উন্নয়ন” বিষয়ক একটি ফিচারে প্রকাশ করেছিলেন।
বিগত ১৪ নভেম্বর’২০১৭ ইং রাতে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর পৌরসভাস্থ টান কালিয়াকৈর মহল্লার নিজ বাড়ী থেকে র‌্যাব-১ অজানাকে কারনে তাকে গ্রেফতার করে। পরে ঢাকা বিমান বন্দর থানার একটি মামলায় আটক দেখানো হয়। দীর্ঘ ০৯ মাস কারাভোগের পর ১৫ আগষ্ট ২০১৮ হাইকোর্টের আদেশে জামিনে কারামুক্তি হয়।
কিন্ত বিমান বন্দর থানার ওই মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কৃষিবিদ উসিট মং এবং তার স্ত্রী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক নেত্রী ম্রারাজা লীন ওরফে ম্যাম্যাএ। এই দম্পত্তির জীবনচিত্র ও কর্মকান্ড নিয়ে আইয়ুব রানা অনেক ফিচার/সংবাদ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করেছেন। এছাড়া উসিট মং পরিচালিত ্এনজিও ব্যুরো অনুমোদিত সংস্থা “রাখাইন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন”র সাথে খন্ডকালীন কর্মরত ছিলেন। দীর্ঘদিন থেকেই এদের সাথে আইয়ুব রানার পরিচয় ও যোগাযোগ ছিলো। ম্রারাজা লীন এক সময় ঢাকায় বসবাস করলেও ২০১৫ সন থেকে স্থায়ীভাবে মায়ানমারে বসবাস করছেন। অপর দিকে উসিট মং দু’ ছেলে-মেয়ে নিয়ে থাকেন ঢাকা শহরে।
উসিট মং এর স্ত্রী মিয়ানমারের নাগরিক, তিনি স্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের জন্য মিয়ানমার যাবার প্রক্কালে অজানা কারনে ঢাকা হযরত শাহ জালাল আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরে বিগত গত ১৮ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১টায় সন্দেহ বসতঃ র‌্যাব-১ কর্তৃক ১৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে। আটকের পর ২০/১০/২০১৭ইং তারিখে ধারা: ৬(২)/৭(৩)/১০/১২/১৩-এ বিমানবন্দর থানার নং ৪১ মামলা দায়ের করা হয়। উসিট মং এর স্ত্রী বিদেশী নাগরিক হওয়া স্বত্বেও এই মামলায় তাকেও অভিযুক্ত করা হয়।
উসিট মং গ্রেফতারের পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার বিষয়ে সহায়তা/ সংবাদ প্রকাশের জন্য আইয়ুব রানাকে জানানো হয়। সংবাদ পেয়ে আইয়ুব রানা তার বাসায় গিয়ে উসিট মং এর ছেলে-মেয়েকে সান্তনা দেন এবং মামলার বিষয়ে পরিবারের সদস্যদের সাথে আলাপ আলোচনা করেন। এরপর ১১ নভেম্বর ২০১৭ তারিখ রাতে হঠাৎ উসিট মং এর স্ত্রী ম্রারাজা লীন মিয়ানমার থেকে আইয়ুব রানাকে ফোন করেন। ফোনে তিনি তার স্বামীর বিষয়ে পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি এবং তার ছেলে-মেয়ের খোঁজ-খবর রাখতে অনুরোধ করেন। কিন্তুু ১৩ নভেম্বর ২০১৭ ইং দিবাগত রাতে র‌্যাব-১ তাকে গ্রেফতার করে।
আইয়ুব রানা একজন সৎ, িিনর্ভিক, নিলোর্ভ, প্রচার বিমুখ সাদা মনের মানুষ। মুক্তিযুদ্ধ ও আদিবাসী বিষয়ক লেখক, গবেষক, সাংবাদিক ও সংগঠক। সব সময় তিনি তৃণমূল মানুষের পাশে থেকে সমাজ উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। নিজে কোন দূর্নীতি ও অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়েন নি। নিরবে নিভৃতে গরীব, দুঃখী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি মানুষের কাজ করেছেন। কখনো অপরাধ ও দূর্নীতির সাথে আপোষ করেন নি। সারাজীবন জঙ্গীবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করেছেন। বিভিন্ন সভা/সেমিনারে সব সময় তিনি ক্ষুদে নৃ-গোষ্ঠির উন্নয়ন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের কথা বলেছেন। এইসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত ফিচার/সাক্ষাতকার ও নিবন্ধ লিখেছেন।
এছাড়া, দীর্ঘদিন যাবত গাজীপুর থেকে প্রকাশিত অর্ধ সাপ্তাহিক সুবাণী পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এখনো বিভিন্ন পত্রপত্রিকা/ ম্যাগাজিনে লেখালেখী করে যাচ্ছেন। সাংবাদিকতা ও লেখালেখীর পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথেও জড়িত। কালিয়াকৈর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সভাপতি ছিলেন। তাঁর লেখক ও সাংবাদিকতার জীবনে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হউক আমার দ্বারা এমন কোন লেখা বা সংবাদ বা বক্তব্য প্রকাশিত হয় নাই।
আইয়ুব রানা গ্রেফতারের পর অনেক লেখক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ হতবাক হয়ে গেছেন। কারণ, আইয়ুব রানা সব সময় স্থানীয় ভাবে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে পাশে থাকেন। কোন পক্ষের সাথে কখনোই বিরোধ বা বির্তকে জড়িয়ে পড়েননি। অনেকের কাছে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, কেন আইয়ুব রানাকে গ্রেফতার করা হলো? তার নামে মামলা দায়েরের রহস্য কি?
আইয়ুব রানা সব সময় নিজেকে দেশের কল্যানে নিয়োজিত রেখে মানবতা ও সাধারণ জনগণের পাশে থাকার চেষ্টা করছেন। অর্ধ সাপ্তাহিক সুবাণী পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ ও প্রান্তিক মানুষের পক্ষে কাজ করতে গিয়ে অনেক প্রভাবশালী মহলের সাথে তাঁর বিরোধিতা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এক সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক গংদের কর্মকান্ডের বিপক্ষে অবস্থান নেয়ায় তাদের সাথেও বিরোধ সৃষ্টি হয়। আইয়ুব রানা মনে করেন, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক গংদের বিভিন্ন কার্যক্রমের বিরোধীতা করায় মন্ত্রী সিন্ডিকেট তাঁর উপর ক্ষিপ্ত হয়। ওই সময় মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রীর ঝুট সিন্ডিকেট, যুবলীগনেতা রফিক হত্যা সহ কয়েকটি সংবাদ অর্ধ সাপ্তহিক সুবাণী’তে প্রকাশ হয়েছিলো। একই সময়ে বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস সাহেবের সাথে ম্রারাজা লীন এর এক সৌজন্য সাক্ষাতের ফিচার/ছবি সুবাণীতে প্রকাশ হয়েছিলো। এসব কারনে মন্ত্রী সিন্ডিকেট প্রকাশ্যে কিছু না বল্লেও গোপনে তাকে শায়েস্তা করার পথ খোঁজতে থাকে।

জামিনের পর আইয়ুব রানা গোপনে জানতে পারেন, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক স্থানীয় সংসদ সদস্য হওয়ায় র‌্যাব-১ আইয়ুব রানার সম্পর্কে মন্ত্রীর কছে জানতে চেয়েছিলো। সুযোগ বুঝে তিনি আইয়ুব রানাকে উক্ত মামলায় আসামী করেন। এর বিরুদ্ধে আইয়ুব রানা প্রতিবাদ করার চেষ্টা করলে ২/৩দিন অপরিত লোকজন গোপনে নানান রকম ভয়ভীতি দেখায় এবং বেশী বাড়াবাড়ি করলে পুনরায় মামলায় জড়ানোর হুমকী দেয়। সেই থেকে বিগত সময়ে আইয়ুব রানার ভয়ে ভয়ে দিন কেটেছে। মামলার বিষয়ে কোথাও কোন মুখ খুলতে পারেন নাই।
ফ্যাসিবাদ সরকারের পতনের পর আজও আইয়ুব রানা মিথ্যা রাষ্ট্রবিরোধী মামলা মাথায় নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। এই মিথ্যা মামলা বহন করতে গিয়ে তাঁর জীন এখন নানান সংকটে জর্জড়িত।

Facebook Comments Box

Posted ২:২০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৩ মার্চ ২০২৫

dainikbanglarnabokantha.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক

রুমাজ্জল হোসেন রুবেল

বাণিজ্যিক কার্যালয় :

১৪, পুরানা পল্টন, দারুস সালাম আর্কেড, ১১ম তলা, রুম নং-১১-এ, ঢাকা-১০০০।

ফোন: ০১৭১২৮৪৫১৭৬, ০১৬১২-৮৪৫১৮৬, ০২ ৪১০৫০৫৯৮

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

design and development by : webnewsdesign.com

nilüfer escort coin master free spins