আব্দুল্লাহ আল মামুন,মাদারীপুর | বৃহস্পতিবার, ২০ মে ২০২১ | প্রিন্ট
১৯ মে ৫ জ্যৈষ্ঠ মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার সেনদিয়া গণহত্যা দিবস। একাত্তর সালের ওইদিন রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের সেন্দিয়া, পলিতা, ছাতিয়ানবাড়ী ও খালিয়া গ্রামের দেড় শতাধিক মুক্তিকামী মানুষ প্রান রক্ষা করতে গিয়ে আখ ক্ষেত ও ঝোপ-জঙ্গলের মধ্যে পাক বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলসামসদের হাতে প্রান হারিয়েছিলেন। দীর্ঘ ৪৯টি বছর কেটে গেলেও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে নিহতদের স্মৃতি রক্ষার্থে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহন করায় খুশি শহীদ পরিবারের সদস্য, স্বজন, মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয়রা। তবে তাদের দাবি স্মৃতি সৌধে যেন শহীদদের নামের তালিকা টাঙ্গিয়ে দিবসটি সরকারিভাবে পালন করা হয়।
সরেজমিন ঘুরে প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পাকসেনারা মাদারীপুরের টেকেরহাট বন্দরে সেনা ক্যাম্প স্থাপন করে শুরু করে পৈশাচিকতা। ১৯৭১ সালের মে মাস, বাংলা ৫ জ্যৈষ্ঠ বিকেল ৪টা থেকে ৫টার দিকে পাকবাহিনী লঞ্চ যোগে গোপালগঞ্জ জেলার ভেন্নাবাড়ী ঘাটে নেমে চরচামটা নামক এলাকা থেকে সংখ্যালগু এলাকায় নির্বিচারে গুলি বর্ষণ ও অগ্নি সংযোগ শুরু করে। সেখান থেকে পাকবাহিনী তাদের দোসরদের সহযোগিতায় নৌপথে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর হয়ে রাজৈরের কদমবাড়ী এলাকায় গান বোট থেকে নেমে সড়ক পথে বাড়ী-ঘরে অগ্নি সংযোগ করে আসছে খবর পেয়ে খালিয়া ইউনিয়নের সেন্দিয়া, পলিতা, খালিয়া ও ছাতিয়ান বাড়ী এলাকার হাজার হাজার নিরীহ জনগন আখ ক্ষেতসহ বিভিন্ন ঝোপ জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। যারা বাড়ী ঘর ছেড়ে পালাতে পারেনি তাদেরকে ধরে নিয়ে যায় পশ্চিম সেনদিয়া ফকিরবাড়ির ভিটায়, সেনদিয়া বাওয়ালী ভিটায়, বারিকদার বাড়ীর উত্তর বাঁশ বাগানে, শচীন বারিকদারের বাড়ির দক্ষিণ খালপাড় এবং ছাতিয়ানবাড়ির পুকুর পাড়ে। কারো চোখ বেঁধে, কারো হাত-পা বেঁধে, বাবা-মায়ের সামনে সস্তানকে, আবার সন্তানের সামনে বাবা-মাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। আবার কাউকে বুটজুতা দিয়ে লাথি মেরে ক্ষত-বিক্ষত করে আগুনে পুড়িয়ে বা গুলি করে হত্যা করে। এছাড়াও অনেককে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। দীর্ঘ সময় এই হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে নরপিশাচরা ফেরার উদ্দেশ্যে পশ্চিম সেনদিয়া গ্রাম দিয়ে যেতেই আখ ক্ষেতে মানুষের শব্দ পেয়ে ব্রাশ ফায়ার করে। নিমিষেই প্রাণ হারায় শতাধিক মানুষ। এছাড়াও পাকবাহিনীর দোসররা আখক্ষেত এবং ঝোপ জঙ্গলে তল্লাসী চালিয়ে মাটির গর্তের মধ্যে লুকিয়ে থাকা ও ঝোপ-জঙ্গলের মধ্যে ৬টি স্পটে দেড় শতাধিক পলায়নরত মানুষকে গুলি করে হত্যা করে। নারকীয় এ তান্ডব শেষে পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা চলে যাবার পর গ্রামের অন্যান্য লোকজন ও আত্মীয় স্বজন এসে ঝোপ জঙ্গল এবং আখ ক্ষেতের মধ্যে থেকে লাশ উদ্ধার করে খালের পাশে ৬টি স্থানে দেড় শতাধিক মানুষকে মাটি চাপা দিয়ে রাখে। এ সকল স্থানে মাটি খুড়লেই মাটির মধ্যে থেকে এখনও মাথার খুলি ও হাড়-গোড় বেড়িয়ে আসছে। সেদিনের ঘটনায় দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধ নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার হয় এবং গুরুতর আহত হয় অনেকেই। পাকবাহিনীর গুলিতে আহদের অনেকেই এখনও ধুঁকে ধুঁকে মরছে। এরপর কেটে গেছে ৪৯টি বছর। এবছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সংরক্ষণকৃত গণসমাধীস্থলে শহীদদের স্মৃতি সংরক্ষণে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় ৩৪ লাখ ৯৯হাজার ৯৮২ টাকা বরাদ্ধ দেয়। স্মৃতিকেন্দ্রের ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এতে নতুন প্রজম্ম পাক বাহিনী ও তাদের দোসররদের এই নারকীয় ঘটনার স্মৃতি বুকে ধারণ করে জানতে পারবে অজানা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। এলাকার অধিকাংশ জনগন সেদিনের গণহত্যায় কার অঙ্গুলি নির্দেশনায় অজোপাড়া গায়ের এতগুলো নিরীহ মানুষের প্রান কেড়ে নিল স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতেও সে কথা অনেকেই বলতে সাহস পায়নি।
সেদিনের প্রত্যক্ষদর্শী সেন্দিয়া গ্রামের শচীন্দ্র নাথ বারিকদার জানান, ৭১ সালের ৫ জ্যৈষ্ঠ অন্যান্য দিনের মত পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের হত্যা, লুন্ঠন ও অগ্নি সংযোগের কথা মনে করে আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে সেন্দিয়ার বাড়িতে অবস্থান করছিলাম। এ সময় জানতে পারি পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা কদমবাড়ী থেকে অগ্নি সংযোগ করতে করতে এদিকেই আসছে। এ সংবাদ শুনে এলাকার জনগন যে যেইভাবে পারছে পালানোর চেষ্টা করছে। এ সময় তাদের বাড়ির লোকজনও বাড়ির নিকটস্থ আখক্ষেতের মধ্যে পূর্বের করা গর্তের মধ্যে পালিয়েছিল। কিন্তু পাকবাহিনী তাদের বাড়ী-ঘর আগুনে তামা করে দেওয়ার পর চিরুনি অভিযান চালায় ঝোপ-জঙ্গল ও আখ ক্ষেতের মধ্যে। পলায়নরত নিরীহ মানুষগুলো ঘাতকদের দেখে আতঙ্কিত হয়ে উঠে এবং বাঁচার জন্য আকুতি মিনতি করতে থাকে। এতে ঘাতকদের মনে একটুও করুনার উদয় হয়নি। বরংচ ঘাতকরা গণহত্যায় মেতে উঠে। তাদের বুলেটের আঘাতে তার বাবা, মেঝ ভাই, কাকাতো ভাই, কাকিমাসহ পরিবারের ৮ জন সদস্য মারা যান। তাদের লাশগুলো বাড়ীর নিকটস্থ খালপাড়ে একই গর্তের মধ্যে রাখা হয়। গণসমাধিগুলো চিহ্নিত করে স্মৃতি সৌধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ায় খুশি শচীন্দ্র নাথ বারিকদারের পরিবারের সদস্যসহ এলাকাবাসী।
সেদিন এ নির্মম পরিনতির শিকার হয়েছিলেন যারা তারা হলেন- সেনদিয়া গ্রামের পরান শিকারী, পুলিন শিকারী, সুরধনী শিকারী, মধুমালা শিকারী, বড়বুড়ী শিকারী, বিনোদিনী শিকারী, প্রমথ শিকারী, সুবাসী শিকারী, কুমদী বেপারী, এলোকেশী কুন্ডু, সুমিত্রা বৈরাগী, শোভা রানী বৈরাগী, মালতী বৈরাগী, তরঙ্গী বৈরাগী, সুলতা বৈরাগী, ফেলু সরদার, প্রশান্ত সরদার, প্রসেন সরদার, বিরেন বাড়ৈ, সৌদামনি বাড়ৈ, মনিমালা বাড়ৈ, দিপালী বাড়ৈ, ঘ্রান্তি রানী মন্ডল, বেনী মাধব মন্ডল, যশোদা মন্ডল, জ্ঞানদা মন্ডল, ব্রজবাসী মন্ডল, মরী রানী মন্ডল, পাষানী বিশ্বাস, জুড়ান বিশ্বাস, করুনা মন্ডল, গৌরী মন্ডল, মনিন্দ্র মন্ডল, বিমল বাওয়ালী, ঘাঘরী বাওয়ালী, রাইসোনা মোহন্ত, ঘাঘরী মজুমদার, পার্শ্বনাথ বারিকদার, গৌরী বারিকদার, কুসুম রানী বারিকদার, মধুমালা বারিকদার, আলোমতি বারিকদার, ধন্য চন্দ্র বারিকদার, যতীন বারিকদার, আন্না রানী বারিকদার, আয়না রানী বারিকদার, ময়না রানী বারিকদার, সাধন বারিকদার, ভগবতী বারিকদার, শ্রীমতি বারিকদার, পূজা রানী বারিকদার, পুষ্প রানী বারিকদার, রতিকান্ত বারিকদার, জিতেন বারিকদার, ল²ী রানী বারিকদার, মালতী বারিকদার, সুশীলা বারিকদার, শান্তি রানী বারিকদার, সুলতা রানী বারিকদার, জ্ঞানদা বারিকদার, লেবু বারিকদার, শান্তিলতা বারিকদার, মালতী বারিকদার। পলিতা গ্রামের- সুমলা বারিকদার, মনীন্দ্র নাথ বারিকদার, দুঃখীরাম বারিকদার, মালতী বারিকদার, দোলা বারিকদার, মাধবী বারিকদার, মধুমালা বারিকদার, মরী মন্ডল। ছাতিয়ান বাড়ীরÑ নেমু মল্লিক, মালতী মল্লিক, সুমী মল্লিক, পাঁচি মল্লিক, বিরাট মল্লিক, সাধু মল্লিক, কুটী মল্লিক, অনি মল্লিক, কুরি মল্লিক, সরস্বতী মল্লিক, মধুমালা মল্লিক, ভুবন মল্লিক, ক্ষ্যান্ত মল্লিক, সূর্যকান্ত মল্লিক, কুিটবুড়ি মল্লিক, সুধা কির্ত্তনীয়া, রাজু বাড়ৈ, পুলিন বাড়ৈ, অলন্ত বাড়ৈ, কুটি রানী বাড়ী, দশরথ বাড়ৈ, রাম চন্দ্র বাড়ৈ, পাগলী বাড়ৈ, মাখন বাড়ৈ, রসিক বাড়ৈ, সৌদা বাড়ৈ, মনিমালা বাড়ৈ, মঙ্গল বাড়ৈ, সুমতী বৈদ্য, জৈলাশী গোলদার, সুরেন বৈরাগী, চিত্র বৈরাগী, কমলা মন্ডল, জগদীশ বারুরী, গোপাল বারুরী, ঐমুনা বারুরী, মৃত্যুঞ্জয় রায়, রাজ্যেশ্বর রায়, মইফুল রায়, জগবন্ধু বালা, পাচু বালা, রঞ্জন বালা, ফুলমালা বালা, ঘ্রান্তি বেপারী, পরিমল বেপারী, আনন্দ বেপারী, নারায়ন বেপারী। উল্লাবাড়ী গ্রামের- বিজয় বাড়ৈ। খালিয়া গ্রামের- চন্ডীচরণ বালা, কেনারাম মন্ডল, পূণ্যচরণ পালসহ দেড় শতাধিক মানুষ। এছাড়াও স্মরণিকায় ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মহানন্দ সরকারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
রাজৈর উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সেকান্দার আলী শেখ জানান, পাক বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে খালিয়ার সেনদিয়া,পলিতা,ছাতিয়ানবাড়ী ও খালিয়া গ্রামের দেড় শতাধিক মানুষ নিহত হয়। হত্যার পর লাশগুলো ৬টি স্থানে গণকবর দিয়ে রাখা হয়। পরবর্তীতে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সরকার এবং মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের পক্ষ থেকে গণকবরগুলো চিহ্নিত করার জন্য একাধিকবার লোক এসে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জায়গা নির্ধারণ করে। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে সেনদিয়ায় স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্ধ করা হয়। এতে এলাকাবাসী ও মুক্তিযোদ্ধারা খুশি।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন জানান, ১৯ মে ৫ জ্যৈষ্ঠ রাজৈরের খালিয়া ইউনিয়নে যে গণহত্যা হয়েছে, জানা মতে সেখানে একদিনে ১৩১ জন হত্যা করা হয়েছে। সেনদিয়ায় একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হচ্ছে। যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে, সেই শহীদদের নামফলক এই স্মৃতিসৌধে লিখে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, সেদিনের ঘটনায় শিকারী বাড়ীর পরান শিকারী, স্ত্রী সুরধনী শিকারী, ছেলে পুলিন শিকারী ও মেয়ে মধুমালা শিকারীকে হত্যা করা হয়। মা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেলে ৪ মাসের শিশু প্রভাষ শিকারী মায়ের কোল থেকে ছিটকে খালের কচুরীপানার উপর পড়ে থাকে। তার কান্নায় যখন আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠে তখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া এলাকার জীবিত লোকজন যখন স্বজনদের খোঁজ খবর নিতে ঝোপ-জঙ্গল, আখক্ষেত ও খাল এবং পুকুরের আশপাশ খুঁজতে থাকে, ঠিক তখনই একটি শিশুর গগন বিদারী কান্না শুনতে পেয়ে এগিয়ে আসে। খালের কচুরিপানার উপর এক পিতা-মাতা ও স্বজনহারা রক্তাক্ত শিশু কান্না করছে। বাব-মায়ের আদরের পুত্র প্রভাষ শিকারীকে উদ্ধার করা হয়। কান্না থামানোর যতই চেষ্টা করা হয়েছে,ততই তার কান্না যেন আরো বেড়ে গেছে। এক অনিশ্চিত জীবন যাত্রা। এমনি করুণ পরিস্থিতিতে প্রভাষ শিকারীকে তুলে দেওয়া হলো বাড়ির নিকটস্থ বিরজনী বাড়ৈর হাতে। বিরজনী নিজ সন্তান পাগলের মৃত্যু জ্বালা কিছুটা লাঘব করতে চেয়েছিলেন প্রভাষ শিকারীকে ঘিরে। কিন্তু প্রভাষের বুক ফাটা কান্নায় বিরজনী তাকে ফিরিয়ে দিলেন তার বোন ফুলমালার কাছে। ফুলমালা তার আদরের ভাইকে আদর যতেœ বড় করে তুলতে তুলে দেন মুকসুদপুরের খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের হাতে। তার গগন বিদারী কান্না সহ্য করতে না পেরে সেখানেও বহু মায়ের কোল রদবদল করতে হয়েছে প্রভাষকে। খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের আদর যতেœ বড় হওয়া প্রভাষ শিকারীর নামকরণ করা হয় মোশি বাড়ৈ। পিতা-মাতা ও ভাই-বোনকে হারিয়ে খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের আশ্রয়ে বড় হয়ে মোশি বাড়ৈ বর্তমানে আমেরিকায় বসবাস করছেন। পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে সেনদিয়া,পলিতা,ছাতিয়ানবাড়ী ও খালিয়ার শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে মোশী বাড়ৈর প্রচেষ্টায় একটি স্মৃতিসৌধ নির্মান করা হয়।
পরে মোশী বাড়ৈ ও তার সহধর্মিনী দীপা বাড়ৈর অর্থায়নে এবং গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বানিয়ারচরের শিক্ষক মাইকেল বাড়ৈর সার্বিক সহযোগিতায় ও ডঃ অরুন কুমার গোস্বামীর সম্পাদনায় ২০০৯ সালের ১৪ এপ্রিল শহীদ স্মৃতি সেনদিয়া নামে একটি স্মরণিকা বের করা হয়। একাত্তরের ৫ জ্যৈষ্ঠ পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছিলেন স্মরণিকায় তাদের ১২৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এর ৫ বছর পর আ.লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক নৌ-পরিবহন মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি ২০১৪ ইং সালের ১৭ মে বিকালে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তুর স্থাপনকালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার আলবদর আলসামসদের হাতে নিহতদের স্মৃতি রক্ষার্থে মাদারীপুরে ১০টি বদ্ধভূমিতে স্মৃতিকেন্দ্র নির্মাণ করার ঘোষনা দেন। এর মধ্যে রয়েছে রাজৈরে ৬টি ও মাদারীপুর সদরে ৪টি। এ ঘোষনার ৬ বছর পর মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় কর্তৃক মাদারীপুরের রাজৈরে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি যাদুঘর ও স্মৃতিকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ৪টি স্থানে ১ কোটি ৩৯ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬৪ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। এর মধ্যে খালিয়ার সেনদিয়ায় স্মৃতিকেন্দ্র নির্মাণের জন্য বরাদ্ধ দেওয়া হয় ৩৪ লাখ ৯৯ হাজার ৯৮২ টাকা।
Posted ১:৩৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ মে ২০২১
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।