
সাহেব আলী নওগাঁ: | সোমবার, ০২ জুন ২০২৫ | প্রিন্ট
নওগাঁর আত্রাই উপজেলার শুটকিগাছা গ্রামের এনামুল ইসলাম মাছ চাষে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।তার পিতা মেসলেম উদ্দিন পেশায় একজন মৎস্যচাষী। ২০১০ সালের ‘অফ-ফ্লেভার মুক্ত পাঙ্গাশ-কার্প মিশ্রচাষ’ পদ্ধতি নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন, বর্তমানে স্থানীয় পর্যায়ে সফল একজন মৎস্য উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত। শুরুতে নিজস্ব ১টি পুকুরে মাছ চাষ শুরু করলেও বর্তমানে আরো ৫টি পুকুর লিজ নিয়ে মোট ৬টি পুকুরে মাছ চাষ করছেন তিনি ।
২০০ বিঘা আয়তনের এই পুকুর গুলোতে মিশ্রভাবে পাঙ্গাশ, রুই কাতলা মৃগেল ,কার্প এবং পবাসহ বিভিন্ন জাতের মাছ চাষ করছেন। মাছ চাষের ফলে যেমন তিনি লাভনান হচ্ছেন অন্যদিকে তার উদ্যোগে মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
এনামুল ইসলাম জানান, বাড়িতে কোন কাজকর্ম করতে তেমন ভালো লাগতো না। আমাদের এলাকায় অনেকে বিদেশ থাকেন। তাই আমিও বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন বিভোর হই, সে মোতাবেক ২০০৭ সালে সিঙ্গাপুর চলে যাই সেখানে ৩ বছর থাকি ভালো সুবিধা করতে না পারায় ২০১০ সালে দেশে ফিরে আসি। এসে হতাশায় পরে যাই পরে বাবার পরামর্শে অল্প পুঁজি নিয়ে মাছ চাষ শুরু করি। পরে আশা থেকে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা নিয়ে আমি বড় আকারে কার্যক্রম শুরু করি। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন আমার আয় খরচ বাদে বছরে ২০ লক্ষ টাকা এছাড়া ১২ জন লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পেরেছি। অফ-ফ্লেভার মুক্ত পদ্ধতিটি কাজে লাগিয়ে আমার মাছের স্বাদ ও মান উন্নত হয়েছে, যা ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে সাহায্য করছে।”
পুকুরের কর্মচারীরা বলেন, এনামুল একজন ভালো মনের মানুষ। সে আমাদের এখানে কাজ দিয়েছে এতে আমরা যা পাই তাই দিয়ে সুন্দর ভাবে আমাদের পরিবার চালিয়ে নিচ্ছি।
এনামুলের সাফল্যে এলাকাবাসী অত্যন্ত খুশি। এলাকার বাসিন্দা লেমন বলেন, “এনামুল ভাইয়ের মাছ চাষ দেখে আমাদের মধ্যেও আগ্রহ জন্মেছে। তার মতো সফল হতে চাই। তার উদ্যোগে আমাদের এলাকায় নতুন একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।”এনামুলের এ সফলতা শুধুমাত্র তার নিজস্ব নয়, বরং এটি স্থানীয় মানুষের জন্য উদাহরণ এবং অনুপ্রেরণার উৎস।
আশার আঞ্চলিক ব্যাবস্থাপক সাইফুদ্দিন বলেন, এনামুলের এই সফলতার পেছনে সঠিক পরামর্শ ও প্রশিক্ষণের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা পিকেএসএফের অর্থায়নে আশার সমন্বিত কৃষি ইউনিটের মৎস্য খাতের আওতায় তাকে মাছ চাষে উন্নত প্রযুক্তি ও বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করেছি। তার এই সাফল্য অন্য মাছ চাষিদের জন্যও অনুপ্রেরণা হতে পারে।”
নওগাঁ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: ফেরদৌস আলী বলেন, “এক্ষেত্রে এনামুল ইসলাম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মাছ চাষে এমন সাফল্য শুধু ব্যক্তিগত উন্নয়নই নয়, বরং স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সরকারি সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে আমরা এই চাষিদের পাশে দাঁড়াতে সর্বদা প্রস্তুত আছি।”
Posted ৬:০৩ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০২ জুন ২০২৫
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।