টি এম এ হাসান সিরাজগঞ্জ | বুধবার, ২৪ নভেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ভুল চিকিৎসায় চার বছর বয়সী এক শিশু কন্যার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় ক্লিনিকে ভাংচুর চালিয়েছেন তার স্বজনেরা। গতকাল সোমবার (২২ নভেম্বর) রাত উপজেলার শ্যামলীপাড়ায় অবস্থিত জননী ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ঘটনাটি ঘটে। এদিকে আজ মঙ্গলবার সকালে শিশুটির পরিবারের লোকজন ক্লিনিকে ভাঙচুর চালিয়েছেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। শিশুর মা সুমা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার মেয়ে সুমনার পিঠে ফোঁড়া ওঠায় গতকাল সোমবার রাত আটটার দিকে আমার ভাইকে নিয়ে ফোঁড়ার অপারেশনের জন্য স্থানীয় জননী ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক আহসানুল হকের কাছে যাই। সেখানে চিকিৎসক আমার মেয়েকে দেখে রক্ত পরীক্ষাসহ নানা ধরনের পরীক্ষা করতে দেয়। পরে পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে চিকিৎসক আহসানুল হক সুমনার পিঠে পরপর পাঁচটি ইনজেকশন প্রয়োগ করে। এ সময় আমার মেয়ে চিৎকার করে বলে ‘‘মা আমি আর বাঁচব না’’। তারপরই আমার মেয়ের খিঁচুনি শুরু হয় এবং ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। শিশু সুমনার মামা মুনিয়া মিয়া বলেন, ‘আমার ভাগনিকে নিয়ে যখন ক্লিনিকে গেলাম তখন চিকিৎসক তাকে দেখে অপারেশনের কথা বলে এবং কিছু ওষুধ আনতে বলেন। এরপর সুমনাকে জোর করে পরপর পাঁচটা ইনজেকশন প্রয়োগ করে বলেন, একটু ঠান্ডা হলে নিয়ে আসবেন ফোঁড়া কেটে বের করে দেওয়া হবে। এরপর সুমনার খিঁচুনি শুরু হয়। তখন অক্সিজেন দেওয়ার জন্য তাকে একটা রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে বলেন সুমনার অপারেশনের জন্য আপনাদের একটা স্বাক্ষর লাগবে। ডাক্তার এই কথা বলে আমাদের কাছ থেকে জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে নেন। পরে আমাদের আর রুমের ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। আমরা এই চিকিৎসকের শাস্তি চাই।’ এ বিষয়ে স্থানীয় জোমেলা বেগম বলেন, ‘সুমনা সুস্থভাবে হেঁটে বাসা থেকে বের হয়। কিন্তু ক্লিনিকে যাওয়ার পর ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় তাকে মৃত হয়ে বাসায় ফিরতে হয়। আমরা এই কসাই চিকিৎসকের বিচার চাই।’ এবিষয়ে জননী ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ারুল ইসলাম মুক্তা বলেন, শিশুটি মৃগী রোগী ছিল জানিয়ে বলেন, ডাক্তার তাকে অবশ করার ইনজেকশন দিলে তার খিচুনি ওঠে। পরে তাকে আইসিইউতে রাখা দরকার মনে করে এখান থেকে রেফার্ড করে। পরে তাকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় বলে শুনেছি। এবিষয়ে কোনও দ্বায় নিলে চিকিৎসক নিবেন কিন্তু আমার প্রতিষ্ঠানে কেন ভাংচুর করে ৫০-৫৫লক্ষ টাকার ক্ষতি করা হলো জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমি এবিষয়ে জিডি করার জন্য থানায় এসেছি। এ বিষয়ে উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি কিন্তু আমি বাইরে একটি মিটিংয়ে থাকায় বিস্তারিত বলতে পারছিনা। তবে শুনেছি ভুক্তভোগী শিশুর পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দিতে আসা হয়েছে। আমি কার্যালয়ে ফিরে এবিষয়ে পরবর্তী ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো।
Posted ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৪ নভেম্বর ২০২১
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।