মোঃ তোফাজ্জল হোসেন, মোহনপুর, (রাজশাহী) প্রতনিধিি : | শনিবার, ০৩ জুলাই ২০২১ | প্রিন্ট
কয়েকদিনের টানা বর্ষণে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে কিছু কিছু নিম্নাঞ্চলে চলতি মুওসুমে সদ্য রোপনকৃত আউশ ধান, পানবরজ ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এতে উপজেলার কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। উপজেলার পারিলাডাঙ্গি, রতনডাঙ্গি, ঘাসিগ্রাম,বাদেজুল, শীবপুর,ধুরইর, পিয়ারপুর, লক্ষিপুর, পালশা, ভীমনগর, মল্লিকপুর, জাহানাবাদ, খাৎতা, মোল্লাডাঙ্গি, হরিদাগাছিসহ আরো কিছু এলাকার নি¤œাঞ্চলের আউশ ধানসহ বিভিন্ন মুওসুমি সবজি ক্ষেত, পান বরজ তলিয়ে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার একাধিক কৃষক জানান, কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলের শত শত বিঘা জমির আউশ ধান, সবজি ক্ষেত ও পান বরজ ও কিছু মাছ চাষের পুকুর তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে সবজির মাচানেও পানি উঠেছে। পান বরজে পানি ঢুকে ডগায় পচন ধরেছে। অবিরাম বর্ষণের কারণে অনেক এলাকার পাকা সড়কেও ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও শিবনদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর দু’প্রান্তে প্লাবিত হয়ে ফসল নষ্ট হয়েছে।
মোহনপুর উপজেলার বরইকুড়ি গ্রামের সবজি চাষি শরিফ উদ্দিন বলেন, করোনাকালীন সময় চরম অভাবে সংসার চলছিল। তাই অভাব দুর করার জন্য ৮ কাঠা জমিতে পটল চাষ করেছি। বাগানও ভাল হয়েছে। কেবল দু- সপ্তাহ ৯০০ টাকা মন দরে ২ মন পটল বিক্রি করেছি। এর মধ্যে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে আমার পটলের বাগান তলিয়ে গেছে। একই গ্রামের আব্দুল আওয়াল বলেন, আমি ৬ কাঠা জমিতে গত বছর পান বরজ করি। কিন্তু পান বিক্রির পূর্বেই বন্যায় তলিয়ে পান গাছ মরে যায়। এ বছর পুনরায় পান গাছ লাগানোর পর কেবল গাছ হয়েছে এরই মধ্যে হটাৎ ভারী বর্ষণে পান বরজ তলিয়ে মরে যাচ্ছে।
খাৎতা গ্রামের মিঠু সরকার জানান, গ্রামের ধান চাষি মুকবুল হোসেন বলেন, গত মুওসুমে বোরো চাষ করে ভাল ফলন ও বাজারে ভাল মূল্যে বিক্রি করতে পেরে দারুন খুশি। তাই চলতি মওসুমে ৪ বিঘা জমিতে আউস ধান রোপনের কয়েক দিনের মাথায় টানা ভাবী বর্ষণে ধান তলিয়ে গেছে। মৎস্য চাষি আজিজার রহমান বলেন, কয়েক দিন পূর্বে পানির অভাবে ভরা মুওসুমে পুকুরে মাছ চাষ বিঘিœত হলো। অথচ হটাৎ এক রাতের ভারী বৃষ্টিতে আমার কয়েকটি পুকুরের পাড় উপচে পানির সাথে মাছ বিলে ভেসে গেছে। যা রক্ষা করার সময় হয়নি।
রাজশাহীতে বৃহস্পতিবার মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভোর থেকে অবিরাম বৃষ্টি ঝরেছে। তবে এতে স্বস্তিও ফিরেছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বর্ষণ হয়েছে। এতে রাজশাহীতে ৮৮ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, প্রথম দফায় বৃহস্পতিবার ভোর রাত ৩টার দিকে রাজশাহীতে বৃষ্টি শুরু হয়। তবে তার পরিমাণ ছিল কম। পরে ভোর ৬টা থেকে আরম্ভ হয় মুষলধারে বৃষ্টি। বৃষ্টি চলে একটানা দুপুর ১২টা পর্যন্ত। এরপর থেমে থেমে বৃষ্টি চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এখনো আকাশে মেঘ আছে। তাই আরো বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা তথ্যকেন্দ্র জানায়, টানা বর্ষণ ও উজান থেকে ধেয়ে আসা পানিতে প্রতিদিনই পদ্মা ও বারনই নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মোঃ তোফাজ্জল হোসেন, মোহনপুর, রাজশাহী।
মোবাইল নং- ০১৭৮৩১৮৪৯৯১
তাং- ০৩/০৭/২০২১ ইং
Posted ৫:৪৯ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৩ জুলাই ২০২১
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।