
স্টাফ রিপোর্টার: | সোমবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২২ | প্রিন্ট
সাতক্ষীরা ভোমরা স্থল বন্দরের কার্য়ক্রম থমকে গেছে। যে কোন সময় বন্দরে আমদানি রপ্তানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ব্যবসায়ীরা বলছে, ভোমরা বন্দরে সিএন্ডএফ এ্যাসোসিয়েশন কমিটি গঠন নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। নির্বাচন না দিয়ে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালি জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কমিটি গঠন করা হয়। এই নিয়ে সিএন্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা ফুঁসে উঠেছে। অপর দিকে ভোমরা সিএন্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের নতুন আহবায়ক কমিটি চাঁদাবাজি বন্ধে লাগাতার কর্মসূচি দিয়েছেন। ভোমরা সিএন্ডএফ নেতারা বলছেন, ভারতের পাশে সিরিয়ালের নামে গাড়ি প্রতি আদায় করা হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। এই চাঁদা আদায় বন্ধের জন্য ভারতের ঘোজাডাঙ্গা সিএন্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনকে লিখিতভাবে ও বৈঠক করে জানানো হয়েছে। সি,্এন্ডএফ এ্যাসোসিয়েশন এর পক্ষ থেকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও প্রধানমন্ত্রীর নিকট অভিযোগ করেছেন। ইতি মধ্যে চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য তারা লাগাতার কর্মসূচি দিয়েছে। শনিবার ও রোববার দুই ঘন্টা কর্ম বিরতি ও মানবন্ধন করেছে ব্যবসায়ী, সিএন্ডএফএজেন্ট এ্যাসোসিয়েশন ও শ্রমিক সংগঠন। খেঁাজখবর নিয়ে জানাযায়, ২০২১ সালে ভারতের বিধান সভা নির্বাচনের পর সে দেশে ক্ষমতাসীন দলের পরিচয় দিয়ে ঘোজা ডাঙ্গা এলাকায় শুরু হয় চাঁদা আদায়। সেদেশে ক্ষমতাসীন দলের সদস্য বারি, ভুট্ট ও সমরেশের নেতৃত্বে সিরিয়ালের নামে রপ্তানিকারদের নিকট থেকে এই চাঁদা আদায় করে। গাড়ি প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। আর চাঁদার টাকা না দিলে এক থেকে দেড় মাস গাড়ি আটকে রাখে। বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ীরা টাকা দিয়ে পন্য রপ্তানি করছে। এভাবে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। এই চাঁদার টাকার দুই দেশের সি এ্যান্ড এফ থেকে শুরু করে প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতাও জনপ্রতিনিধি ভাগ পেয়ে থাকেন। যার করনে এই চাঁদা আদায় বন্ধের কোন উদ্যোগ নেওয়া হয় না। ভোমরা বন্দরের প্রচার রয়েছে চাঁদা টাকা ভাগাভাগির দায়িত্বে রয়েছে ভোমরার পানি ডাক্তার ও মিলন। ভোমরা সিএন্ডএফএজেন্ট এ্যাসোসিয়েশন অফিস সূত্রে জানাযায়, ভোমরা স্থল বন্দর সি্এন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশন কমিটি গঠন নিয়ে কোন নির্বাচন হয় না। জনপ্রতিনিধি. প্রভাবশালী নেতা ও প্রশাসন তাদের খুশি মত কমিটি তৈরি করে। সম্প্রতি কমিটি বাতিল করে এজাজ আহম্মেদ স্বপনকে আহবায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিকে ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন দিতে বলা হয়। সেই অনুযায়ী ১১ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন ছিল। কিন্তু আইননি জটিলতায় কারণে সেই নির্বাচন বন্ধ হয়ে যায়। এর পর থেকে বন্দরে সংকট চলতে থাকে। সাধারণ ব্যবসায়ীরা জানায়, ভোমরা স্থল বন্দর থেকে কোলকাতার দুরুত্ব কম হওয়ায় তারা এই বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী। কিন্তু ভোমরা স্থল বন্দরে শুরু হয়েছে ক্ষমতার লড়াই। প্রতিদিন ট্্রাক পার্কিং থেকে শুরু করে সব জায়গায় চলে চাঁদা আদায়। আর ভারতে ঘোজাডাঙ্গায় সিরিয়ালের নামে প্রতিদিন আদায় হয় কোটি টাকা। এই টাকার ভাগাভাগি নিয়ে ভোমরা বন্দর অস্থির হয়ে উঠেছে। চাঁদাবাজিসহ নানা জটিলতার কারণে ব্যবসায়ীরা এই বন্দর ছেড়ে দিচ্ছেন। ফলে রাজস্ব আয় দিন দিন কমে য়াচ্ছে। আর ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সিএন্ডএফ, শ্রমিক সংগঠনসহ সকল পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা। ভোমরা স্থল বন্দর সিএন্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের আহবায়ক এজাজ আহমেদ স্বপন জানান, সিরিয়ালের নামে ভারতের ঘোজা ডাঙ্গায় রপ্তানি কারকদের নিকট থেকে প্রতিদিন কোটি টাকা চাঁদা আদায় করে। এই টাকা দুই দেশের জনপ্রতিনিধিও প্রশাসনের অনেকেই পেয়ে থাকেন। তিনি দায়িত্বে আসার পর ঘোজাডাঙ্গা সিএ্যান্ডএফকে লিখিত ভাবে চাঁদা আদায় বন্ধ করার জন্য জানিয়েছেন। এছাড়া সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ইতিমধ্যে বন্দরের সকল পর্যায়ের নেতাদের সাথে মিটিং করেছেন। সবার ঐক্যমতের ভিত্তিতে চাঁদা আদায় বন্ধের জন্য লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার ও গত শনিবার সিএন্ড এফ এ্যাসেসিয়েশন এর উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করা হয়েছে।
Posted ১:০৬ অপরাহ্ণ | সোমবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২২
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।