| শুক্রবার, ০২ অক্টোবর ২০২০ | প্রিন্ট
নবকন্ঠ প্রতিবেদক: সবজির বাজার এখন ব্যাপক চড়া। পরিস্থিতি এখন এরকম যে বয়লার মুরগি আর কোন কোন সবজির দাম প্রায় একই। বন্যার পানি উত্তরাঞ্চলে ফের বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীর বাজারে সবজির দাম আবারও বাড়ছে দ্রুতগতিতে। বিক্রেতারাও পরামর্শ দিচ্ছেন সবজরি বদলে বয়লার মুরগি খেতে। তাহলে হয়ত সবজির দাম কমতে পারে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে কয়েকটি সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। একশ টাকার ওপরে এখন কেজি বিক্রি হচ্ছে। এদিকে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৫ টাকা কমে কিছু সবজির প্রায় সমান দামে বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, প্রথম দফায় বন্যার কারণে সবজির দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরে বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমছিল। এখন আবার বন্যার পানি ও টানা বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কমে আসায় দাম বাড়ছে দ্রুতগতিতে। এদিকে বন্যার পানি বাড়ার কারণে বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমছে।
এছাড়া নিত্যপণ্যের বাজারে নতুন করে বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটারে আরেক দফায় ৫ টাকা বাড়াচ্ছে পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো। মিলগেট চালের দাম কমলেও খুচরা বাজারে এখনও কোন প্রভাব পড়েনি। তবে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ সবজির দাম আরও বেড়েছে। সবচেয়ে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে শিম, গাজর, পাঁকা টমেটো, শসা, বেগুন ও বরবটি। শিমের কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। পাঁকা টমেটো একই দামে বিক্রি হচ্ছে। বেগুন ও বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। টমেটো ছাড়া অন্য সবজি একশ টাকার নিচে ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৫ টাকা কমেছে। এখন ব্রয়লার মুরগির কেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে অন্যান্য মুরগি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগির ২০০ থেকে ২২০ টাকা ও দেশি মুরগি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি।
মিরপুর-১ নম্বর শাহআলী কাঁচাবাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. সেলিম জানান, এখন এক কেজি সবজির দামে এক কেজি ব্রয়লার মুরগি পাওয়া যাচ্ছে। আগে এই সবজির দাম তিন ভাগের একভাগ ছিল। এখন বন্যার কারণে এই দুই পণ্যের দামে প্রভাব পড়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি ক্রেতাদের সবজির বদলে মুরগি খাওয়ার পরামর্শ দেন।
রাজধানীর বাজারে এখন ৫০ টাকার নিচে কোন সবজি নেই বললেই চলে। গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজির পটল শুক্রবার ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতিটি লাউ ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হালিতে ১০ টাকা বেড়ে কাঁচাকলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। একই হারে বেড়ে প্রতিকেজি ঝিঙার কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা এবং কাঁকরোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা হয়েছে। আগাম ফুলকপি ও বাঁধাকপির দামও ১০ টাকা বেড়ে প্রতিটি ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম আরও বেড়ে কাঁচামরিচের কেজি এখন ২০০ থেকে থেকে ২৪০ টাকা।
ক্রেতারা জানান, অন্য বছরে মৌসুমের এই সময়ে সবচেয়ে কম দামে ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি পেপে পাওয়া যেত। এবার বন্যার আগেও ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি ছিল। প্রথম দফায় বন্যার পরে দাম বেড়ে ৫০ টাকায় উঠেছিল। এর পরে দাম কমলেও এখন আবার বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা হচ্ছে কাঁচা পেপে।
তবে সবজির আড়তে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে প্রতিকেজি বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঝিঙ্গা ৫০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা ও গাজর ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটারে ৫ টাকা বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো। এই দাম বাড়ানোর বিষয়টি বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনে জানিয়েছে বাংলাদেশ ভেজিট্যাবল ওয়েল অ্যান্ড বনষ্পতি ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। এতে বর্তমানে কোম্পানিভেদে প্রতি লিটার বোলতজাত সয়াবিন তেল ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নতুন দরে তা ১১৫ টাকা হবে। পাঁচ লিটারের বোতলের দাম ৫৫৫ টাকায় উঠবে। তবে নতুন দরের তেল এখনও বাজারে বিক্রি শুরু করেনি কোম্পানিগুলো। দাম বৃদ্ধির ঘোষণায় বাজারে থাকা বোতলজাত সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ খূচরা মূল্যে ছাড় দিচ্ছেন না দোকানিরা। এতে আগের সপ্তাহের চেয়ে লিটারে ৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। এর আগে কোম্পানিগুলো এক দফায় লিটারে ৪ টাকা বাড়িয়েছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে দেশের বাজারে বাড়ছে বলে জানিয়েছে কোম্পানিগুলো।
সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫ টাকা কমে এখন দেশি পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। রসুন ৯০ থেকে ৮০ টাকা ও আদা ২০০ থেকে ২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এছাড়া মিলগেটে নির্ধারিত নতুন দরে বিক্রি শুরু হলেও খুচরা বাজারে দাম কমেনি চালের। শুক্রবার রাজধানীর বাজারে মিনিকেট ৫৬ থেকে ৬০ টাকা, আটাশ ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, নাজিরশাইল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়।
Posted ৮:৪৪ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০২ অক্টোবর ২০২০
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।