বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা-মাছুয়া খেয়া পারাপারের জন্য সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় খুশি যাত্রীরা। দীর্ঘ দিনের জুলুম ও অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া বন্ধ হওয়ায় ইজারাদার ও প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলা ও বরিশাল বিভাগের পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলাকে দিখন্ডিত করেছে প্রমত্তা বলেশ্বর নদী। এই দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষের যোগাযোগ রক্ষার জন্য বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন অথোরিটির খেয়া চালু রয়েছে। প্রতিবছর নির্দিষ্ট দরপত্রে অংশগ্রহন করে এই খেয়া ইজারা নিতে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে খেয়া পারাপাড়ে অতিরিক্ত ভাড়া গ্রহন করতেন মঠবাড়িয়া এলাকার ইজারাদাররা। এবছর রায়েন্দা বাজার এলাকার আব্দুস ছালাম হাওলাদার নামের এক ব্যবসায়ী ঘাট ইজারা নেওয়ার পর থেকে মাথাপিছু ১০০ থেকে ৩০০ টাকার ভাড়া নামিয়ে আনেন ৫০ টাকায়। ব্যবসায়ীর এমন উদ্যোগে স্থানীয়রা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ভবিষ্যতেও ৫০ টাকা ভাড়া বিদ্যমান রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা।
অন্যদিকে ভাড়া কমানোয় ক্ষিপ্ত স্থানীয় কিছু অসাধু লোক নিয়ম ভঙ্গ করে দুটি ট্রলারে রায়েন্দা বড় মাছুয়া আড়াআড়ি লোক পারাপার করছে। এভাবে চলতে থাকলে এই ইজারাদারকে লোকসান গুনতে হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। খেয়া পার হওয়া গোলাম মওলা নামের রায়েন্দা এলাকার এক যাত্রী বলেন, মঠবাড়িয়ার সাথে আমাদের বিভিন্ন কারণে ঘনিষ্ট যোগাযোগ রয়েছে। তাই প্রায়ই মঠবাড়িয়া যেতে হয়। কিন্তু খেয়া পারাপারে আমাদের অনেক টাকা যেত। ২০০ থেকে পাঁচশ টাকা দিয়েও আমরা খেয়া পাড় হয়েছি। কয়েক মাস হল নতুন ইজারাদার এসে ভাড়া কমিয়েছে। এখন মাত্র পঞ্চাশ টাকা দিয়ে পাড় হই। আমরা তার আচরণে খুবই খুশি। আব্দুর রাজ্জাক তালুকদার, নজরুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন বলেন, এক সময় ২০০ টাকা দিয়ে ঘাট পাড় হতে হত। আবার দুপুর, সন্ধ্যা অথবা কম লোক থাকলে এই ভাড়া ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হত। এখন আর এই জুলুম হয় না আমাদের উপর। এখন মাত্র ৫০ টাকায় পার হতে পারি। ইজারাদার আব্দুস ছালাম হাওলাদার বলেন, ঘাট ইজারা নেওয়ার পর থেকে সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী ৫০ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছি। যার ফলে যাত্রীদের মাঝে সস্তি ফিরে এসেছে। তবে এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কিছু ব্যক্তি আমাদের ক্ষতি করার জন্য রায়েন্দা-মাছুয়া আড়াআড়ি লঞ্চ পারাপাড় শুরু করেছে। কিন্তু আড়াআড়ি পারাপার না করার জন্য দয়াল-২ নামের ওই লঞ্চটি এর আগে প্রশাসনের কাছে অঙ্গিকার নামা দিয়েছিলো। তারপরও তারা আড়াআড়ি যাত্রী পারাপার করে আমাদের ক্ষতি করছেন। অবৈধভাবে এই দয়াল-২ লঞ্চের চলাচল বন্ধের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।