বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক,কর্মচারীরা চরম সংকটের মধ্যে দিন অতিবাহিত করছে। করোনা মহামারির কারণে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো মোরেলগঞ্জে ও সব কেজি স্কুল বন্ধ আছে। ফলে স্বল্প বেতন পাওয়া এসব কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক,কর্মচারীরা দীর্ঘদিন বেতন না পাওয়াতে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এসব স্কুলগুলি এক বছর তিনমাস বন্ধ থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষক পেশা বদল করেছে, অনেকে স্কুল ছেড়ে দিয়েছে।
প্রায় স্কুলের আসবাবপত্র নষ্ট হতে চলেছে। আবার বেশিরভাগ স্কুল ভাড়া বাড়িতে পরিচালিত হওয়ায় করোনায় ভাড়া দিতে না পেরে কেউ স্কুল বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়েছে।মোরেলগঞ্জ পৌরসভা মিলে ২১টি কিন্ডারগার্টেন স্কুল আছে।মোরেলগঞ্জ কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকগন স্বল্প বেতনে চাকরি করেন। যদিও এসব স্কুলে নেই কোন বেতন কাঠামা। ফলে শিক্ষকগনকে টিউশনি করতে হয়।
বেকার ছাত্র-ছাত্রীরা এসব প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন। বর্তমানে শিক্ষকদের বেতনও বন্ধ,আবার টিউশনিও বন্ধ। ফলে যাঁরা শুধু এই আয়ের উপর নির্ভরশীল, তাঁেদর অবস্থা খুবই খারাপ। মোরেলগঞ্জের নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন কিন্ডারগার্টেন কেজিস্কুলের শিক্ষক বলেন, ’কি আর বলবো, বড় কষ্টে আছি। ধার-দেনা করে বর্তমানে চলছি। সরকার যদি আমাদের কোন সহায়তা প্রদান না করেন, তাহলে আমাদের পথে বসতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের বেতন ছাড়া কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলির আয়ের অন্য কোন উৎস নেই। আবার এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের আয়ের আরেকটি উৎস টিউশনি।
এ সবই করোনার কারণে বন্ধ রয়েছে। অবিলম্বে এসব স্কুল না খুললে এসব শিক্ষক পরিবারের আয়-রোজগার একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে।দেশে কতগুলি কিন্ডারগার্টেন আছে , এ তথ্য সরকারের কাছে নেই বলে জানা গেছে। কিন্তু সরকার তাঁদের নতুন বই সরবরাহ করেন। বার্ষিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের সুযোগ দেয়। মোরেলগঞ্জ দি লাইসিয়াম একাডেমি অধ্যক্ষ মো. শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ। শিক্ষকদের বেতন দিতে পারছি না। শিশুরা স্কুলে আসতে পারছে না। অনেক প্রতিষ্ঠানের মালিক স্কুল বিক্রি করে দিয়েছে বলে শুনেছি। স্কুলের আসবাবপত্রগুলি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তারপরও সরকারের আদেশ আমরা মেনে স্কুল বন্ধ করে দিয়েছি। সরকার যদি এই স্কুলগুলির শিক্ষকদের যদি কোন প্রণোদনা দেন, তাহলে অনেক উপকার হতো।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোল্লা জালাল উদ্দিন বলেন,’কিন্ডারগার্টেন স্কুলে আর্থিক সহায়তার কোন সুযোগ নেই। আমরা সংসদ টেলিভিশনের মাধ্যমে ভার্চুয়াল ক্লাস নিচ্ছি। এখন মোবাইল, রেডিও ও অনলাইনে ক্লাস- এই তিনটি প্ল্যাটর্ফম ব্যবহার করে যেন সব শিক্ষার্থীর কাছে পৌছতে পারি, সে বিষয়ে কাজ করছি।