এনামুল হক,শেরপুরঃ | মঙ্গলবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২১ | প্রিন্ট
আজ ঐতিহাসিক ৭ ডিসেম্বর।শেরপুর ও নালিতাবাড়ী হানাদার মুক্ত দিবস।১৯৭১সালের এ দিনে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মিত্রবাহিনীর সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধারা শেরপুর সদর উপজেলা ও নালিতাবাড়ী অঞ্চল শত্রু মুক্ত করে।এ দিন মিত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক প্রয়াত জগজিৎ সিং অরোরা হেলিকাপ্টার যোগে নেমে শেরপুর শহীদ দারোগ আলী পৌর পার্ক মাঠে এক সংবর্ধনা সভায় শেরপুরকে মুক্ত বলে ঘোষণা দেন।এ সময় মুক্ত শেরপুরে প্রথম বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সুদীর্ঘ ৯ মাসে বর্তমান শেরপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ৩০থেকে ৪০টি ছোট বড় খণ্ডাকারে যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে।এসব যুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে ৫৯ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন।এ দিকে পাক হানাদারদের নির্মমতার শিকার হয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে ১৮৭জন,শেরপুর সদর উপজেলার সূর্যদী গ্রামে ৫২জন,ঝিনাইগাতী উপজেলার জগৎপুর গ্রামে ২০জন মুক্তিকামী মানুষ শহীদ হয়েছেন। অপরদিকে ৪ডিসেম্বর কামালপুরের ১১নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ ও গুলি বর্ষণের মুখে স্থানীয় পাকসেনারা পিছু হটে।৫ডিসেম্বর থেকে পাকসেনারা কামালপুর-বকশীগঞ্জ থেকে শেরপুর শহর হয়ে জামালপুর অভিমুখে রওনা হয়।অবশেষে পাকসেনারা ৬ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে শেরপুর শহরের উপর দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে জামালপুর পিটিআই ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়।যার ধারাবাহিকতায় ঐতিহাসিক ৭ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় শেরপুর। ৭ ডিসেম্বর-২০২১খ্রিঃ মঙ্গলবার শেরপুর জেলা প্রশাসন কর্তৃক সকাল ১০ ঘটিকায় শেরপুর পৌর শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হতে বর্ণাঢ্য আনন্দ র্যালী শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভে এসে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ,প্রধান অতিথি,বিশেষ অতিথিসহ আমন্ত্রিত অতিথি বৃন্দ। এ উপলক্ষে সকাল ১১ঘটাকায় শেরপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা,স্মৃতিচারণ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।মনোমুগ্ধকর হৃদয় জুড়ানো স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে শেরপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ মোমিনুর রশীদ এর সভাপতিত্বে প্রাধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের মাননীয় হুইপ,বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আতিউর রহমান আতিক এমপি।মহান মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে প্রাধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন শেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমারুন করিব রুমান। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শেরপুরের পুলিশ সুপার মোঃ হাসান নাহিদ চৌধুরী,শেরপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন,শেরপুর জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এ.এস. নুরুল ইসলাম হিরো,শেরপুর সদর উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এডভোকেট মোখলেছুর রহমান আকন্দ প্রমূখ। এছাড়াও জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা,বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী অফিসার বৃন্দ,বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ,রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গ,সুশীল সমাজের বিভিন্ন স্তরের ব্যাক্তি ও সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবাহী স্থান,গণকবর ও বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান।
Posted ১:১৩ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২১
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।