নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার বারদী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের নুনেরটেক গুচ্ছ গ্রাম মায়াদ্বীপ বেসরকারি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা জনাব শাহেদ কায়েসের বিরুদ্ধে নুনেরটেক গ্রামবাসী ঝাঁড়ু মিছিল করেছে ১৩ই ফেব্রুয়ারি ২০২২ইং দুপুরে।
এলাকাবাসী জানায়, শাহেদ কায়েসের প্ররোচনায় শরিফ নামের এক ইভটেজার বাদী হয়ে নুনেরটেক বাসীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে। এবং মানববন্ধন ও সাংবাদিক সম্মেলন করে কিশোরীর শ্লীলতা হানির ঘটনাকে দামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এলাকাবাসী আরো জানায়, কিশোরীকে শ্লীলতা হানির ঘটনাটি দামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে বিভিন্ন জায়গায় মানববন্ধন ও সাংবাদিক করে আসছে একটি কুচক্রী মহল। এই কুচক্রীদের কারণে পিতা-মাতা-হারানো এতিম কিশোরী ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ায় প্রশাসনের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে বলে জানান নুনেরটেকবাসী।
গত ২২ শে জানুয়ারি ২০২২ ইং রাতে নুনেরটেক গ্রামে পিতা-মাতা-হারানো এতিম এক কিশোরীকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদে এলাকাবাসীরা দুই যুবককে গণধোলাই করেছে । তারই জের ধরে গত কয়েকদিন যাবত কখনও নারায়ণগঞ্জে কখনও সোনারগাঁওয়ে মানববন্ধন করে আসছে কুচক্রী মহলের প্রধান শাহেদ কায়েস। সে তাদের পরিবারের সদস্যদের মারধর ও স্কুল শিক্ষিকার উপর হামলার অভিযোগে ১৬ জনকে আসামি করে থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে উত্যক্তকারী শরিফকে বাদী সাজিয়ে। সত্যকে গোপন রেখে মিথ্যাকে সত্য করতে শাহেদ কায়েস নামে একজন শিক্ষিত ভদ্র লোক নুনেরটেক গুচ্ছ গ্রামের জনসাধারণ ও খেটে খাওয়া জেলে সম্প্রদায় ও আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করাসহ গুচ্ছ গ্রামের নাম কর্তন করে মায়াদ্বীপ নাম প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। মাসে পনের শত টাকায় একটি ঘর ভাড়া নিয়ে মাদুর বিছিয়ে ছোট ছোট বাচ্চাদের পড়াতেন উত্যক্তকারী শরিফের বোন মরিয়ম আক্তার। বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকার দায়িত্ব দিয়ে তাকে শিক্ষিকা বানিয়ে প্রচার করে বেড়াচ্ছে বিদ্যালয় ব্ন্ধ করার উদ্দেশ্যে শি্ক্ষিকার পরিবারের উপর হামলা শিরোনামে পত্র পত্রিকায় সংবাদও ছাপিয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী। এলাকাবাসী আরো জানান এ ঘটনায় থানায় দু’পক্ষই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করেছে কিন্তু রহস্যজনক কারনে উত্যক্তকারীর পক্ষে মামলা রুজু করা হলেও শ্লীলতা হানির শিকার এতিম কিশোরীর পক্ষে মামলা এখনও রুজু করা হয়নি।
সরেজমিনে নুনেরটেক গ্রামে গিয়ে কিশোরীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কিশোরীকে একই গ্রামের মহিউদ্দিনের ছেলে শরীফ গত এক বছর ধরে পিতা মাতা হারানো এতিম মেয়ে পাখি আক্তার (১৪) কে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। পিতা-মাতা হারানো এতিম কিশোরী তার প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় কিশোরীকে শরীফ বিভিন্ন সময় উত্যক্ত করতো। গত শনিবার রাতে শরীফ কিশোরীর বাড়িতে যাওয়ার পর কিশোরীর খালু তার ভাগ্নিকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় শরীফ ও তার বন্ধু কিশোরীর খালুর উপর হামলা চালিয়ে আহত করে।
পরে ঘটনাস্থলে এলাকাবাসীরা ছুটে এসে শরীফ ও শাকিল মিয়াকে গণধোলাই দেন। এ ঘটনার পর উত্যক্তকারী শরীফের বোন স্থানীয় একটি বেসরকারি পাঠশালার শিক্ষিকা মরিয়ম আক্তার ও তার আরেক ভাই রাশেদ ও তার মা নাছিমা বেগম ঘটনাস্থলে কিশোরীর বাড়িতে আসায় উত্তেজিত এলাকাবাসীরা তাদেরকেও মারধর করে। এ ঘটনার পর শরীফ বাদী হয়ে সোনারগাঁও থানায় নুনেরটেক গ্রামের ১৬ জনকে আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ দিলে মামলা দায়ের করা হয়।
অভিযোগপত্রে বাদী উল্লেখ করেন, আসামিরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাদের (বাদীর) বাড়িঘর ভাংচুর করে নগদ টাকা সহ’ঘরের মালামাল লুট করে নিয়ে যায় এবং তাদের পরিবারের পাঁচজনকে পিটিয়ে আহত করে।
এদিকে কিশোরীর খালু মাসুদ জানায়,রহস্য জনক কারনে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়, অথচ আমরা যে অভিযোগ দায়ের করেছি তা এখনো মামলা রুজু করা হয়নি,অথচ কিশোরীকে ইভটিজিং করার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ঘটনা এখানে ইভটিজিং বা নারী শিশু নির্যাতনের মামলা দায়ের না করে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে ১৬ জনকে আসমী করে মামলা রুজু করা হয়। যদি আমরা মা,বোন ও মেয়েদেরকে নিরাপত্তা দিতে না পারি তাহলে আমাদের বেঁচে থেকে কি লাভ?
এবিষয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন মহলের সু-দৃষ্টি কামনা করে এবং মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেছেন। তিনি যেন নুনেরটেক গুচ্ছ গ্রামের খেটে খাওয়া জেলে সম্প্রদায়ের নিরীহ জনসাধারণকে কুচক্রী মহলের মিথ্যা মামলার হাত থেকে রক্ষা করেন।
এদিকে এ ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদ এলাহী ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম মুস্তাফা মুন্না জানান, এক কিশোরীকে ইভটিজিং করার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
সোনারগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে,আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে