নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে এসিল্যান্ডকে চাঁদা না দেওয়ার কারনে ব্যবসায়ীর একটি ড্রেজার পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ৭ মার্চ ২০২২ইং সোমবার দুপুরে উপজেলার বারদী ইউনিয়নের দলরদির ছটাকিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ড্রেজারের দুটি ইঞ্জিন, ৫ ড্রাম তেল ও শ্রমিকদের তৈজস পত্রসহ প্রায় ৬৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী হাজী আফজাল হোসেন। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ব্যবসায়ী আফজাল হোসেনের অভিযোগ, এসিল্যান্ড গোলাম মোস্তফা মুন্না বৃহস্পতিবার তার অফিসে ডেকে নিয়ে সার্ভেয়ার নুরে আলমের সামনে ১০ লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় এসিল্যান্ড নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তার গাড়ি চালক আবু মিয়াকে দিয়ে ড্রেজারে আগুন ধরিয়ে দেন। এদিকে গত রবিবারও জামপুর ইউনিয়নের পেরাব এলাকায় একটি ভেকু পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ মঞ্জুরুল হাফিজ। আফজাল হোসেন জানান, বারদী ইউনিয়নের ছটাকিয়া এলাকা থেকে শুরু করে জামিরা এন্ড শ্যামা নামের ড্রেজারের মাধ্যমে একটি কোম্পানির বালু ভরাট করার জন্য পাইপ লাইন টানা হয়। লাইন টানা দেখে এসিল্যান্ড গত বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ী হাজী আফজাল হোসেনকে তার অফিসে ডেকে নিয়ে যায়। তিনি পাইপ লাইন টানার অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চান। এক পর্যায়ে তিনি ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। রবিবারের মধ্যে টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দেন। দাবিকৃত টাকা না পেয়ে তিনি সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিজে দাড়িয়ে থেকে তার গাড়ি চালক আবু মিয়াকে দিয়ে পেট্রোল ঢেলে ড্রেজারে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে ড্রেজারের দুটি ইঞ্জিন, ৫ ড্রাম তেল ও শ্রমিকদের তৈজস পত্রসহ প্রায় ৬৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ড্রেজার শ্রমিক মোক্তার হোসেন জানান, এ ড্রেজারের বৈধ কাগজপত্র ছিল। কাগজপত্র দেখানোর কথা বললে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেছে এসিল্যান্ড গোলাম মোস্তফা মুন্না। কাগজপত্র দেখে অবৈধ থাকলে জেল বা জরিমানা করতে পারতেন। কিন্তু আইনের লোক হয়ে তিনি আইন লঙ্ঘন করেছেন। আইন তিনি নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন। সোনারগাঁও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম মোস্তফা মুন্না বলেন, অবৈধ কাজে ব্যবহার করায় ড্রেজারে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছি। দু’দিন আগে তাকে ড্রেজার সরিয়ে নেওয়ার কথা বলেছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে না পেয়ে ড্রেজারে আগুন দেওয়া হয়েছে। তবে চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেন। সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদ এলাহী বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তবে এসিল্যান্ড নিজে ড্রেজারে আগুন দিতে পারেন না। নারায়ণগঞ্জে জেলা প্রশাসক মোঃ মঞ্জুরুল হাফিজ বলেন, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।