বুধবার ১৬ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩১ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

>>

নায়িকা হয়েও কবি ছিলেন

  |   রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০   |   প্রিন্ট

নায়িকা হয়েও কবি ছিলেন

নূরুদ্দীন দরজী:

কবি জীবনানন্দ দাশের কথায়,’আমি কবি আকাশে কাতর আঁখি তুলি-হেরি ঝরা পালকের ছবি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন,’আমি এমনভাবে পা ফেলি যেন মাটির বুকেও আঘাত না লাগে,আমারতো কারুকে দুঃখ দেবার কথা নয়। এমন সুন্দর মানসের হয়েও কতনা কবি ও সাহিত্যিককে শেষ জীবন কাটাতে হয়েছে দহনে দহনে।
নাম মেহজাবিন বানু। সিনেমায় দেওয়া নাম-মিনা কুমারী ‌।১৯৩৩ সালে জন্মেছিলেন ভারতের বোম্বেতে। হিন্দি সিনেমা জগতের অন্যতম সেরা নায়িকা। পৃথিবীতে ছিলেন মাত্র ৩৯ বছর। ১৯৭২ সালের ১ আগষ্ট লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন তিনি। মাত্র ৩৯ বছর সময়ের ৩৩ বছর‌ই অভিনয়ের সাথে জড়িত ছিলেন। পিতা আলী বক্সের ইচ্ছেতেই সিনেমায় প্রবেশ। ৭বছর বয়সে সিনেমা শুরু করে ৩৩ বছরে ৯০টির ও বেশি সিনেমায় অতি দক্ষতা ও প্রশংসার সাথে কাজ করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো হচ্ছে-পাকিজা, গঙ্গা,বিদ্যা, নূরজাহান, কহিনূর, হালাকু, মেম সাহেব, আজাদ,দুবিঘা জামিন ও বৈইজু বাওরা।
মিনা কুমারীকে বলা হয়, ট্রেজেডী কুইন। বৈইজু বাওরাসহ অনেক ছবিতে তিনি ট্রেজেডীর দারুন স্বাক্ষর রেখে গেছেন। তার অভিনয় শৈলী দর্শকদের মন কেড়ে নেয় আজ‌ও। চলন-বলন, বাচনভঙ্গি সহ প্রতিটি পদক্ষেপ‌ই দর্শক মনে রোমান্সের আবেশ তৈরি করে। তার প্রায় সবগুলো নৃত্য‌ই দারুন বলা যায় যা বার বার দেখতে ইচ্ছে করে। হিন্দি আজাদ ছবিতে-,দেখজে বাহার আ্যয়ে, গানের সাথে তার রুচিশীল নৃত্যের ছন্দময় ধারা যারা দেখেছেন তাদের বোধ হয় অন্যসব নৃত্যের প্রতি আকর্ষণ কমে যাওয়ার‌ই কথা। সর্বশেষ ছবি -পাকিজা,যা তার মৃত্যুর মাত্র ৩ সপ্তাহ আগে মুক্তি পেয়েছিল।
অভিনয় জীবনের পাশাপাশি তিনি কবিতা লিখতেন। এ কবি সুটিং এর অবসরে কবিতা চর্চায় মনোনিবেশ করতেন। তৎকালীন একজন সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেছিলাম,’সারাদিনতো অভিনয়েই ব্যস্ত থাকেন-কবিতা লিখেন কিভাবে? জবাবে তিনি বলেছিলেন, লেখার জন্য খুব বেশি সময়ের দরকার হয়না-তবে লেখার ইচ্ছের জন্য একটু সময় দিলেই লেখা হয়ে যায়। মিনা কুমারী গজল, কবিতা, নজম ইত্যাদি লিখতেন। তিনি অত্যন্ত ভাল আবৃত্তি করতে এবং গাইতেও পারতেন। তার কাব্যগ্ৰন্মের নাম-,তানহা চান্দ। দ্যা পোয়েট এ্ লাইফ বিয়ন্ড সিনেমা-,নামে অনুবাদ করেছেন জৈনক নূরুল ইসলাম নামের এক কাব্যরসিক। কাব্য ,তানহা চান্দ, এর দুটি লাইন এরুপ- চান্দ তানহা হ্যায় আসমান তানহা/ দিল মিলা হ্যায় কাহা কাহা তানহা।
অনেক ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক কামাল আমরোহীকে। কিন্তু শেষ ভাল যায়নি। জীবন চলার পথে এক চরম মুহুর্তে স্বামী নাকি তাকে তিন তালাক উচ্চারণ করেছিল। এর উত্তর তিনি কবিতার মাধ্যমেই দিয়েছেন এভাবে-তালাকতো দে রহে হো নজর এ কেহরকে সাদ/ জ‌ওয়ানি ভি মেরা লৌটা দো মেহরকে সাথ।

লেখকঃ সাবেক উপজেলা শিক্ষা অফিসার (টিইও)

Facebook Comments Box

Posted ১১:২৩ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০

dainikbanglarnabokantha.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

রূপা
(1495 বার পঠিত)
ছোটগল্প (দেনা)
(1045 বার পঠিত)
দূর দেশ
(862 বার পঠিত)
কচু শাক চুরি
(832 বার পঠিত)
কৃষ্ণ কলি
(794 বার পঠিত)

সম্পাদক

রুমাজ্জল হোসেন রুবেল

বাণিজ্যিক কার্যালয় :

১৪, পুরানা পল্টন, দারুস সালাম আর্কেড, ১০ম তলা, রুম নং-১১-এ, ঢাকা-১০০০।

ফোন: ০১৭১২৮৪৫১৭৬, ০১৬১২-৮৪৫১৮৬

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

design and development by : webnewsdesign.com

nilüfer escort coin master free spins