এম ওবায়েদুল কবীর, স্টাফ রিপোর্টার: | মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৯টির দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। সোমবার (২৭ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় দলীয় চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
নরসিংদী জেলার ৫টি নির্বাচনী আসনে মনোনয়ন প্রাপ্তরা হলেন-
নরসিংদী-১ (সদর) আসনে লাঙ্গল প্রতিকে ভোট লড়তে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মো. ওমর ফারুক মিয়াকে।
গত ৩ জুন নরসিংদী জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে ওইদিন জেলা জাতীয় পার্টির কমিটি ঘোষণা না দিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকায় গিয়ে ঘোষণা দেওয়ার কথা জানিয়ে সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে জুলাই মাসের কমিটি ঘোষণা দেওয়া হয়। কমিটিতে মো. ওমর ফারুক মিয়াকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। নরসিংদী জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর মো. ওমর ফারুক মিয়া দলটিকে ঢেলে সাজাতে উদ্যোগী হয়ে দলের আভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনসহ দলের সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করতে নিরলস কাজ করে যান। ওয়ার্ড থেকে শুরু করে উপজেলা ও পৌরসভা পর্যায়ে সাংগঠনিক কমিটিগুলো গঠন করে।
মো. ওমর ফারুক মিয়া অল্প কয়েকদিনের ব্যবধানে জেলা জাতীয় পার্টিতে এনেছে আমূল পরিবর্তন। তাইতো দলের চেয়ারম্যান ও সর্বোচ্চ ফোরাম তার কর্ম নিষ্ঠার মূল্যায়ন করতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসাবে পল্লীবন্ধু হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদের লাঙ্গল তুলে দেন। নরসিংদী জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মো. ওমর ফারুক মিয়া নরসিংদীবাসীর দোয়া ও আশীর্বাদ প্রার্থনা করছেন। সেই সাথে বাংলার রাখাল রাজা পল্লীবন্ধু একসাথে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট কামনা করছেন।
নরসিংদী-২ (পলাশ ও সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত) আসনে দলের মনোনয়ন দিয়ে জাতীয় পার্টির প্রতীক লাঙ্গল তুলে দেন মোহাম্মদপুর থানা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও নরসিংদী জেলা জাতীয় পার্টির উপদেষ্টা এ এন এম রফিকুল ইসলাম সেলিম এর হাতে। পূর্বে থেকেই জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ এর বিশ্বস্ত জন হিসেবে পরিচিত বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান এ এম এম রফিকুল ইসলাম সেলিমকে মাঠ গোছানোর দায়িত্ব দিয়ে পলাশে পাঠান দলীয় চেয়ারম্যান জি এম কাদের। মুন্সিগঞ্জের সন্তান হয়েও নিজের শ্বশুরবাড়ির এলাকা পলাশের মানুষকে অল্প কয়দিনের মধ্যেই আপন করে নেয় রফিকুল ইসলাম সেলিমকে। পলাশবাসীও এর প্রতিদানে তাকে সাদরে গ্রহণ করে। পলাশের সাধারণ মানুষের কাছে রফিকুল ইসলাম সেলিম এখন একটি পরিচিত মুখ, তাই দলীয় প্রধান তার হাতে লাঙ্গল তুলে দেন।
নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনের লাঙ্গল নিয়ে নির্বাচন করার দায়িত্ব দেওয়া হয় দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকা দলের পরীক্ষিত সৈনিক জেলা জাতীয় পার্টির সম্মানিত সদস্য এ এস এম জাহাঙ্গীর পাঠানকে। জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে শিবপুর আসনে লাঙ্গল প্রতিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি। জাহাঙ্গীর পাঠান দীর্ঘ আড়াই যুগেরও বেশি সময় পল্লীবন্ধু এরশাদ এর হাতে গড়া জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থেকে শিবপুরবাসীকে পল্লীবন্ধুর লাঙ্গলের কথা জানান দিয়ে আসছে। দীর্ঘদিন তিনি শিবপুর উপজেলা জাতীয় পার্টির দায়িত্বে তৃণমূল পর্যায়ে দলকে সুসংগঠিত করার কাজ করে গেছেন। জাতীয় পার্টিতে জাহাঙ্গীর পাঠানের ত্যাগ ও পরিশ্রমের কথা বিবেচনায় দলীয় চেয়ারম্যান তাকে লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচনের অনুমতি দেন।
নরসিংদী-৪ (মনোহরদী বেলাব) আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীকে ভোটে অংশ নেবে অ্যাডভোকেট মো. কামাল উদ্দিন। দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পার্টির রাজনীতি করে আসা এডভোকেট কামাল উদ্দিন মনোহরদী উপজেলা জাতীয় পার্টিকে ঢেলে সাজিয়েছেন। মনোহরদী বেলাব এই দুই উপজেলা নিয়ে নরসিংদীর-৪ আসনটি গঠিত। দুটি উপজেলা নিয়ে এ আসন গঠিত হলেও অপেক্ষাকৃত অধিক ভোটার মনোহরদীতে বিধায় দলের সর্বোচ্চ ফোরাম সে দিক বিবেচনায় নিয়ে মনোহরদী উপজেলার সন্তান সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে সর্ব মহলে পরিচিত এ্যাড. কামাল উদ্দিনকে লাঙ্গলের দায়িত্ব দেয়। এর আগেও এ্যাড. কামাল উদ্দিন লাঙ্গল প্রতীকে এ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এ্যাড. কামাল উদ্দিন নরসিংদীর-৪ আসনে লাঙ্গলের প্রার্থী হয়ে ভোটের লড়াইয়ে লড়বেন।
নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) সংসদী আসনে প্রকৌশলী মো. শহীদুল ইসলামকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচিত করেছে দলের নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ড। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রায়পুরা উপজেলা নিয়ে গঠিত নরসিংদী-৫ সংসদীয় আসন। এই আসনে লাঙ্গলের হাল টেনে ধরে রায়পুরার জমিতে ফসল ফলানোর দায়িত্ব দেওয়া হয় দলের আরেক পরীক্ষিত নেতা প্রকৌশলী শহীদুল ইসলামকে। রায়পুরায় দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকা প্রকৌশলী শহিদুল ইসলামের রয়েছে ব্যাপক পরিচিত। রায়পুরায় পল্লী বন্ধুর হাতে গড়া জাতীয় পার্টি কে শক্তিশালী করতে ও সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে গেছেন তিনি। প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম তার মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে রায়পুরাবাসীর মন জয় করতে পারবেন বলে দলের সর্বোচ্চ মহল তার হাতে লাঙ্গল তুলে দেন। বাংলাদেশের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রপ্রধান উন্নয়নের রূপকার পল্লীবন্ধু হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদের লাঙ্গল এর পক্ষে রায়পুরবাসীর কাছে ভোট প্রার্থনাসহ দোয়া কামনা করেন প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম।
জাতীয় পার্টির দলীয় সূত্রে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যারা নিজস্ব নির্বাচনী এলাকায় জনপ্রিয়, সাধারণ মানুষের সাথে রয়েছে সম্পৃক্ততা সর্বোপরি দলের প্রতি একনিষ্ঠ, তাদের বিষয়টি সর্বাগ্রে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত ২০ নভেম্বর থেকে মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু করে জাতীয় পার্টি। দুই দফায় পাঁচ দিনব্যাপী মনোনয়ন ফরম বিতরণ শেষ হয় ২৪ নভেম্বর। এবার দলটির মনোনয়ন ফরম নেন ১ হাজার ৭৫২ জন
Posted ৫:০২ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।