প্রদীপ কুমার দেবনাথ, | সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নরসিংদী – ৪ (বেলাব-মনোহরদী) আসনের নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক সাড়া পড়েছে সাধারণ ভোটারদের মাঝে। আবার দীর্ঘদিন নির্জীব থাকা নেতা-কর্মীদের ও স্ব স্ব প্রার্থীর পক্ষে বেশ জোড়ালো অংশগ্রহণ দেখা যাচ্ছে। এক কথায় আড়ালে চলে যাওয়া নির্জীব নেতা-কর্মীরা সজীব, প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছেন। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশ না নিলেও প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে ভোটের লড়াই তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যে নিজেদের মনোনীত প্রার্থীর বাইরে দলীয় নেতাদের স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
এতে সাধারণ ভোটারের ভোটেই জয়ের জন্য লড়তে হবে প্রার্থীদেরকে। এ কারণে প্রার্থীদের কাছে তাদের কদর বাড়ছে। আগের দুটো (২০১৪ ও ২০১৮) সালের নির্বাচনে জোটবদ্ধ আওয়ামীলীগ ও মিত্রদের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণের নির্বাচনে প্রার্থীদের নিকট সাধারণ ভোটারদের গুরুত্ব ততটা ছিলনা। তখন নির্বাচনে উৎসব আমেজ কিংবা স্বতঃস্ফূর্ততা ততটা দেখা না গেলেও এবার চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছেন। নরসিংদী-৪ আসনে নৌকার মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ৫ম বারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক ৪ বারের নির্বাচিত সাংসদ ও শিল্পমন্ত্রী এ্যাড. নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন (অবঃ) সেনাপ্রধান এবং আওয়ামীলীগের সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রী নুরুদ্দীন খানের ভাতিজা মনোহরদী উপজেলার ৫ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম খান বীরু। প্রার্থী দুজনেই আওয়ামীলীগের জনপ্রিয় নেতা হওয়ায় আওয়ামীলীগের ভোট ভাগাভাগি হবে এটা ধরে নেওয়া যায়। এক্ষেত্রে নির্বাচনে জয়লাভ করতে বেলাব-মনোহরদীর সাধারণ ভোটারদের উপর নির্ভর করতে হবে। যেহেতু উভয় প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট সক্রিয় থাকবে সেহেতু ভোট কারচুপির সুযোগ থাকবেনা। মোড়ে মোড়ে, চায়ের স্টলে, বাজারে, হাঁটে, মাঠে, ঘাটে এখন জল্পনা শুরু হয়েছে এ নির্বাচনকে ঘিরে। নির্বাচনের প্রচারণায় নামতে দু’পক্ষই জোরালো প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাছাড়া ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কে কার আগে দলের নেতাকর্মীদের নিজের পক্ষে টানতে পারেন সে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। সব মিলিয়ে এরই মধ্যে বেলাব-মনোহরদীতে দেশে ভোটের মাতাল হাওয়া বইছে ।
সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রার্থীরা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট চাইতে শুরু না করলেও ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে কৌশলে। প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। ভোটারদের সুবিধা-অসুবিধা, সুখ-দুঃখের খোঁজখবর নিচ্ছেন।
দীর্ঘদিন নির্জীব থাকা কয়েকজন নেতা-কর্মীর সাথে কথা বলে জানা গেছে আগে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তেমন ছিলনা তাই শুধু আওয়ামীলীগের দলীয় নেতারা ছাড়া ভোটারদের কাছে তেমন কেউ যায়নি এমনকি তাদেরকে ও কেউ ডাকেনি। অনেকটা ঘর থেকে বের করে দেওয়ার অবস্থা ছিল। কিন্তু এবার এ অবস্থা সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। তাছাড়া দলীয় শাস্তির ভয়ও থাকছে না। তাই তারা সক্রিয় হয়েছেন স্ব স্ব প্রার্থীর পক্ষে। অনেকেই বলছেন নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে যে কৌশল প্রধানমন্ত্রী নিয়েছেন তা যাদুর মতো কাজ করছে।
বেলাব উপজেলার বেশ কয়েকজন ভোটার জানান, দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থী যেহেতু মাঠে আছেন সেহেতু আমরা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে কেন্দ্রে যেতে পারবো।
দলীয় প্রার্থী এ্যাড. নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, বেলাব-মনোহরদীতে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি এবং শত শত কোটি টাকার অসংখ্য প্রকল্পের কাজ চলমান। তাছাড়া বেলাব-মনোহরদীকে সমৃদ্ধ, আধুনিক ও উন্নত করতে শিল্প, কলকারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তোলার স্থান নির্বাচন, অর্থবরাদ্দ, অবকাঠামো নির্মাণ সকল পরিকল্পনা করা হয়েছে। পূণরায় নির্বাচিত হলে অসমাপ্ত কার্যক্রম সমাপ্ত করবো।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাইফুল ইসলাম খান বীরু জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে নমনীয় মনোভাব থাকায় আসনে আমি আমার জনপ্রিয়তার প্রমাণ দিতে চাই। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে জয়ী হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে নিজেকে নিয়োজিত করবো। এ এলাকার বেকারত্ব, দারিদ্রতা দূরীকরণ, কৃষি ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ, অবকাঠামো নির্মাণসহ জনগণের চাহিদা অনুযায়ী যা করণীয় করবো। আমি কথায় নয় কাজে প্রমাণ করবো।
Posted ৩:০৩ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।