
শান্ত বণিক ও খন্দকার আমির হোসেন | বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ | প্রিন্ট
নরসিংদীর ঐতিহ্যবাহী মৌসুমি ফল লটকন এবার পেয়েছে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের গৌরবময় স্বীকৃতি। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় রাজধানীর বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমি (রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন সুগন্ধা)-তে আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরীর হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে জিআই নিবন্ধন সনদ হস্তান্তর করা হয়।
জাতীয় স্বীকৃতি পেল আরও ১৫টি আঞ্চলিক পণ্য:
‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আরও ১৫টি আঞ্চলিক ঐতিহ্যবাহী পণ্যের হাতে তুলে দেওয়া হয় জিআই সনদ। এ তালিকায় রয়েছে—মধুপুরের আনারস, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের জামুর্কির সন্দেশ, ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই, মাগুরার হাজরাপুরী লিচু, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টি, গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গহনা, সুন্দরবনের মধু, শেরপুরের ছানার পায়েস, গাজীপুরের কাঁঠাল, কিশোরগঞ্জের রাতা বোরো ধান, অষ্টগ্রামের পনির, বরিশালের আমড়া, দিনাজপুরের বেদানা লিচু ও মুন্সীগঞ্জের পাতক্ষীর।
ঐতিহ্য ও অর্থনীতির মেলবন্ধনে লটকনের জিআই অর্জন:
স্বাদ, গন্ধ ও গুণগত বৈশিষ্ট্যে অনন্য নরসিংদীর লটকন জেলার কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবং ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (ইডিসি)-এর সার্বিক সহযোগিতায় পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরে ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট জিআই স্বীকৃতির জন্য আবেদন দাখিল করা হয় (আবেদন নম্বর: GI-50)।
পরে ২০২৪ সালের ৬ মার্চ “ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন, ২০১৩”-এর আওতায় লটকনকে জিআই জার্নাল-৩১-এ অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং ৮ মার্চ তা ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। ফলে এটি দেশের ৩২তম নিবন্ধিত জিআই পণ্যের মর্যাদা অর্জন করে।
কৃষিপণ্য রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার:
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ স্বীকৃতির মাধ্যমে নরসিংদীর কৃষক ও উদ্যোক্তারা নতুন উদ্দীপনা পাবেন। পাশাপাশি, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে লটকনের পরিচিতি ও চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
জিআই স্বীকৃতি শুধুমাত্র একটি পণ্যের গুণগত মানের স্বীকৃতিই নয়, বরং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, কৃষি দক্ষতা এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকেও বিশ্বমঞ্চে উপস্থাপন করে। নরসিংদীর লটকনের এই অর্জন নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী মাইলফলক এবং জেলার জন্য গৌরবের বিষয়।
Posted ৮:৩৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
dainikbanglarnabokantha.com | Shanto Banik
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।