নরসিংদীতে ট্রেনেকাটাপড়ে মা-মেয়ের করুণ মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছে অপর আরেক শিশু। শনিবার (১৩ জুলাই) বিকাল ৫ টা ৫৭ মিনিটে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের ২ নম্বর প্লাটফর্মের ৩ নম্বর লাইনে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রাম গামী সুবর্ণ এক্সপ্রেসে এ দূর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলো শিবপুর উপজেলার ইটাখোলা পূর্ব মুনসেফেরচর এলাকার বাসিন্দা মালয়েশিয়া প্রবাসি জয়নাল আবেদিনের স্ত্রী সাবিনা বেগম (২৫) ও তার দেড় বছর বয়সী কন্যা মায়মুনা আক্তার। এসময় গুরুত্বর আহত হয় তার অপর কন্যা সন্তান সিনহা আক্তার (৪)।

প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, সাবিনা বেগম তার দুই কন্যা সন্তানকে নিয়ে নরসিংদীতে শপিং করতে আসেন। শপিং শেষে বাড়ি ফেরার সময় শিশুদের ট্রেন দেখাতে স্টেশন এলাকায় অবস্থান করেন। এসময় মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে মগ্ন থাকায় রেললাইনে চলে যায় সিনহা আক্তার। পরে কোলে থাকা ময়মুনাকে সাথে নিয়েই সিনহাকে বাঁচাতে ঝাপিয়ে পড়ে মা সাবিনা বেগম। এসময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্রগ্রামগামী সূবর্ণ এক্সপ্রেসের নিচে কাঁটাপড়ে ঘটনাস্থলেই মা-মেয়ের করুণ মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা গুরুত্বর আহত অবস্থায় সিনহাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে আশংঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করেন।

দূর্ঘটনার সময় নিহত সাবিনার সাথে থাকা তার ভাগ্নে তানিম জানায়, আজ বিকেলে মামীর সাথে আমরা ৪ জন নরসিংদীতে আসি। আমরা ইনডেক্স প্লাজা শপিং মলে কেনাকাটা করি। কেনাকাটা শেষে আমরা রেলস্টেশনে ঘুরতে আসি। এসময় আমরা স্টেশনে ছবি তোলছিলাম। সিনহা আমাদের থেকে দূরে চলে যায়। এ সময় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্রগ্রামগামী সুবর্ন এক্সপ্রেস ট্রেনেটি নরসিংদী স্টেশন অতিক্রম করছিল। হঠাৎ মামী ট্রেনের শব্দ শোনে দেখতে পায় সিনহা রেললাইনের কাছাকাছি  চলে গেছে। এসময় কোলে থাকা মাইমুনাকে নিয়ে মামী সিনহাকে বাঁচাতে যায়। এসময় ট্রেনে কাটা পড়ে  মামী ও  মাইমুনার মৃত্যু হয়।

নরসিংদী স্টেশন মাষ্টার এটি এম মুছা জানায়, চট্রগ্রামগামী সুবর্ন এক্সপ্রেস ট্রেনেটি নরসিংদী স্টেশন অতিক্রম করছিল। ওই সময় ট্রেনটির নিচে পরে মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়। একটা শিশু বাচ্চা গুরুত্বর আহত হয়। তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা ডা: মাহামুদুল বাশার কমল জানায়,আহত শিশুটিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরন করা হচ্ছে।

নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো: শহিদুল্লাহ বলেন, ঢাকা থেকে চট্রগ্রামগামী সূবর্ণ এক্সপ্রেসে কাটাপড়ে মা-মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। কারণ অনুসন্ধানসহ বিস্তারিত জানান চেষ্টা চলছে। পরবর্তী আইনী প্রক্রিয়া চলমান রয়েছ।