খন্দকার জসিম উদ্দিন | বুধবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২২ | প্রিন্ট
লাঠিতে ভর করে ১৮ জানুয়ারি নকলা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালেয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা শীত নিবারনের জন্য একটি কম্বলের জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে কম্বল সংগ্রহ করেন। রাত ৯ ঘটিকায় এই বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে গিয়ে হতবাক হয়ে গেলাম। একটা পাতলা লেপ এবং সাহায্যের কম্বল শরীরের উপরে দিয়েও শীতে কাঁপছে। জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা গন।স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এক বীর মুক্তিযোদ্ধা শীতে কাঁপছে। স্বাধীনতা পরবর্তীতে স্ত্রী, ছেলে মেয়েদের ভালো রাখার জন্য অন্যের জমিতে বর্গা চাষ করে সংসারের বোঝা টেনে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। শেরপুর জেলা নকলা পৌরসভায় দরিপাড়া মহল্লার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: সুরুজ্জামান (৭০) বসবাস করেন। ছয় বছর পূর্বে দুই বার ব্রেইন ষ্ট্রোক করে অচল হয়ে পড়েন তিনি। লাঠিতে ভর করে ভর করে কোন মতে হাটাচলা করতে পারে। সুরুজ্জামানের নিজস্ব থাকার ঘর নেই। পূর্বে একটি দুচালা ঘর ছিল, মেরামতের অভাবে ঝড়ে ঘরটি মাটিতে পড়ে যায়। এর পর থেকে ছোট ছেলের ১০ পাতা দুচালা টিনের ঘরে ছেলের বউ,ছেলে নাতিদের সাথে ঠাসাঠাসি বসবাস করছেন। যৌবনে টাকা পয়সার অভাবে ছেলেমেয়ে দের লেখা পড়া করাতে পারেন নি। এজন্য তিনি অনুশোচনায় ভূগছেন। ছেলেরা কেউ দিন মুজুর, ভেনগাড়ী চালক, তাদের সংসার টানাটানি লেগেই থাকে। নাত নাতনি দের লেখা পড়াার খরচ ছেলেমেয়েরা দিতে না পাড়ায় শিক্ষানুরাগী এই বীর মুক্তিযোদ্ধা লেখা পড়ার জন্য ভাতার টাকার একটা অংশ বিলিয়ে দেন। ছেলেদের টানাপোড়ন থাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা সুরুজ্জামান তার সম্মানি ভাতার টাকা ছেলে মেয়েদের সংসারে একটা অংশ বিলিয়ে দেন। বাকি যা থাকে নিজের চিকিৎসা জন্য ব্যায় করেন । এই বৃদ্ধ বয়সে থাকার একটা ঘরের জন্য বিপাকে পড়েন এ বীরযোদ্ধা। ঘরের কথা বলতেই বলেন, টিএনও সাহেব কথা দিয়েছিলেন একটা ঘর দিবেন, আমি কোথায় থাকি, টিএনও স্যার এসে দেখেও গেছেন। অনেকেই ঘর পেয়েছেন। আমার ভাগ্যে জুটে নাই। অসুস্থ শরীর নিয়ে টি এনও স্যারের দুতালা অফিসে কত বার গিয়েছি। কোন কাজ হয় নাই। সাংবাদিক মোশাররফ হোসেন সরকার আমাকে অনেক সাহায্যে সহযোগিতা করেন। এই বীর আরও বলেন কম্বলটা সাংবাদিক সাহেবের মাধ্যমেই পেয়েছেন। কম্বলটি পেয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা খুব খুশি। তিরিশ হাজার মুক্তিযোদ্ধার জন্য বাড়ি তৈরি করে দিচ্ছে সরকার। তবে তাদের নিজস্ব জমি থাকতে হবে। এই প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে ‘অসচ্ছল’ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য। এই বাড়ির নাম হবে ‘বীর নিবাস’। এলাকাবাসীর মতে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা একটি ঘর জরুরী প্রয়োজন। এই অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা একটি বাড়ির জন্য মান্যবর শেরপুর জেলা প্রশাসক,নকলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, নকলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মহোদয় গনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন নকলা উপজেলাবাসী।
Posted ১২:২৩ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২২
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।