| মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ | প্রিন্ট
শান্ত বণিক, বিশেষ প্রতিনিধি: শিশু হত্যার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় ২০০৪ সালে কারাগারে যান কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভার বাসিন্দা মো. হুমায়ুন কবির (৪৩)। ওই মামলায় ২০০৬ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ওই রায়ের পর থেকেই ১৪ বছর ধরে আছেন কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে (কনডেম সেল)।
দেশের সর্বোচ্চ আদালত আজ মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) ওই ফাঁসির রায় বাতিল করায় এখন মুক্তির প্রহর গুনছে সে। আপিল বিভাগের আদেশের অনুলিপি কারাগারে পৌঁছলে তিনি মুক্তি পাবেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী এবিএম বায়েজীদ।
মামলার নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০০৪ সালের ৩০ জুন কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভার শাকেরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী জাহেদা আক্তার জ্যেতি (৮) নিখোঁজ হন। ওইদিনই তার পিতা আব্দুল জলিল লাকসাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। পরে ওই ঘটনায় ওই বছরের ২ জুলাই হত্যা মামলা করে পুলিশ। ওইদিন হুমায়ুনকে গ্রেফতার করা হয়। আসামি হুমায়ুনের দেখানো মতে স্কুলের জঙ্গলের পাশ থেকে জ্যেতির লাশ উদ্ধার করা হয়। যখন লাশ উদ্ধার করা হয় তখন সংশ্লিষ্ট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। ৪ জুলাই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় এই আসামি।
জবানবন্দিতে বলা হয়, সে মেয়ের বাবার কাছে ১৬শত টাকা পেত। তা চাওয়ায় তাকে গালমন্দ করা হয়। সেই ক্ষোভ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড। এই মামলায় ২০০৬ সালের ৫ এপ্রিল চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল হুমায়ুনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এরপরই তাকে সাধারণ সেল থেকে কনডেম সেলে রাখা হয়। আজ পর্যন্ত সে কনডেম সেলেই রয়েছেন। ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে জেল আপিল করেন আসামি। ২০১২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট ফাঁসির রায় বহাল রাখে। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে জেল আপিল করেন তিনি। এই জেল আপিলের ওপর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি হয়। আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট এবিএম বায়েজীদ ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত দেবনাথ শুনানি করেন। শুনানি নিয়ে ফাঁসি বাতিল চেয়ে আসামির আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগ।
এবিএম বায়েজীদ হোসেন বলেন, এ মামলায় বিশ্বাসযোগ্য সাক্ষী ছিলো না। অভিযোগ পত্রে বলা হয়েছে শিশুটির লাশ উদ্ধারের সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেখানে ছিলেন। অথচ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিচারের সময় জেরা করা হয়নি। এছাড়া হুমায়ুন কবির তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন শিশুটি তার খালাত বোনের মেয়ে। কিন্তু শিশুটির বাবা সাক্ষ্যে বলেছেন তিনি আসামিকে চেনেন না। ফলে এখানে সন্দেহ রয়ে গেছে।
Posted ৮:১৯ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।