
টি এম এ হাসান সিরাজগঞ্জ: | রবিবার, ২৯ আগস্ট ২০২১ | প্রিন্ট
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ থানার গুল্টা বাজার এলাকায় আব্দুল মতিন (৩৮) নামে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার পর বিদ্যালয়ের টয়লেটে লাশ ফেলে রাখে খুনিরা। প্রাথমিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সন্দেহ করেন খুনের পেছনে পরকীয়ার বিষয় জড়িত থাকতে পারে। কিন্তু তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে আসল রহস্য। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর কর্মকর্তারা হত্যাকাণ্ডের পেছনে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের বিষয়ে নিশ্চিত হন। এরপর আটক করা হয় ৪জনকে। এর মধ্যে দুজন আদালতে ১৬৪ধারায় স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন। নাম এসেছে আরও একাধিক ব্যাক্তির। তাদের আটকেও অভিযান চলছে। রবিবার (২৯ আগস্ট) সকাল ১১টায় সিরাজগঞ্জের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পিবিআই পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম। তিনি আরও জানান, এর আগে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে তালম গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে স্থানীয় ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ (৩১), গুল্টা গ্রামের মৃত বাবুলাল তির্কীর ছেলে নিরঞ্জন তির্কী (৪৭), স্থানীয় মৃত সুধীর এক্কার ছেলে লালন এক্কা (২৪) ও খোকা তপ্যর ছেলে রাজ কুমার তপ্য (৩১) কে গত ২৫ আগস্ট আটক করা হয়। এর মধ্যে ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম আরিফ ও নিরঞ্জন তির্কী ২৬আগস্ট আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন। আটককৃতদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের বর্ননা করতে গিয়ে সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার বলেন, নিহত মতিনের দোকানের পাশেই ইলেকট্রনিক্সের ব্যবসা করতেন আরিফুল ইসলাম। মতিনের ব্যবসার উন্নতি দেখে ঈর্ষাকাতর হয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করে আরিফ। এক সময় স্থানীয় নিরঞ্জনকে আরিফ মতিন রাতে তার বাসায় ঢিল ছোড়ে জানিয়ে নিরঞ্জনের স্ত্রী পদ্মার সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক করার জন্যই মতিন এই কাজ করে বলে উস্কানি দেন। তিনি আরও জানান, তিন-চার মাস আগে স্থানীয় স্কুলমাঠে একটি ইসলামি জলসায় বক্তার বক্তব্যকে কেন্দ্র করেও আরিফ ও মতিনের বাকবিতণ্ডা হয়। এতেও আরিফের টার্গেটে পরিণত হয় মতিন। পরে ঘটনার দিন ১৬জুন ২০২১ রাত একটার দিকে মতিন দোকান বন্ধ করে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি যাওয়ার সময় তার গতিরোধ করে নিরঞ্জন, নিরঞ্জনের স্ত্রী পদ্মা, নিরঞ্জনের ছেলে মিঠুন ও আরিফ। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে নিরঞ্জন ও আরিফের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় মতিনের। এসময় নিরঞ্জনের সহায়তায় মতিনের ঘাড় মটকে দেয় আরিফ। কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান মতিন। ঘটনা ধামাচাপা দিতে প্রথমে মতিনের নিথর দেহ ১৫মিনিটের মতাও নিরঞ্জনের বাড়িতে রাখা হয়। তার মোটরসাইকেলটি ঘটনাস্থল থেকে ২-৩ কিলোমিটার দূরে ডোবার মধ্যে রেখে আসা হয়। এরপর তাড়াশ থানার গুল্টা বাজার সংলগ্ন একটি হাইস্কুল মাঠের পাশে টয়লেটের ছাদে উঠে মতিনের মরদেহ নিচে ফেলে দেওয়া হয়। করোনাকালীন স্কুল বন্ধ থাকায় টয়লেটে যেতো না কেউ। স্থানীয় মাঠে ছেলেরা ক্রিকেট খেলার একপর্যায়ে বল গিয়ে পড়ে টয়লেটের পাশে। সেখানেই তারা মতিনের মৃতদেহ দেখে। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ১৬ জুন তাড়াশ থানায় নিহতের ভাই মো. মোতালেব হোসেন বাদী হয়ে কএকটি মামলা দায়ের করা হয়। নিহত আব্দুল মতিন (৩৮) তালম পদ্মপাড়া গ্রামের ফজলার রহমানের ছেলে। টি এম এ হাসান সিরাজগঞ্জ ২৯-০৮-২০২১ ০১৭১৮৭২২৭০৬
Posted ২:১৩ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৯ আগস্ট ২০২১
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।