আল মাসুদ লিটন জামালপুর জেলা প্রতিনিধি : | সোমবার, ০৯ আগস্ট ২০২১ | প্রিন্ট
চলমান লকডাউনে জামালপুর সদরের রানাগাছা ইউনিয়নের বানারেরপাড় এলাকায় জন কল্যান কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে লকডাউনে কিস্তির টাকা উত্তোলন এবং টাকা দিতে না পারায় সমিতির অসহায়-দরিদ্র সদস্যদের জরিমানা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জন কল্যান কৃষি উন্নয়ন সমিতির সাইনবোর্ড ব্যবহার করে দাদন (সুদের) ব্যবসা চালাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকার প্রভাবশালী সমিতির সভাপতি ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান রতন ও তার ছেলে (দায়িত্বপ্রাপ্ত সমিতির ম্যানেজার) মো. আল আমিন ওরফে শেখরের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী সমিতির একাধিক সদস্য অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সরকার যেখানে সকল সমিতির কর্তৃপক্ষকে কিস্তি টাকা উত্তোলনের বিষয়ে নিষেধ আরোপ করেছেন তখন সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সমিতির নামে সুধের টাকা তুলতে শেখর আমাদের সাথে বিভিন্ন সময় খারাপ আচরণ করে আসছে। লকডাউনে কোন ব্যবসা নেই। এখন আমরা কোথায় থেকে কিস্তির টাকা দিমু। শেখরের বাবা সদর উপজেলার রানাগাছা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন। তাদের দাপটে অসহায়-দরিদ্র সাধারণ মানুষ আজ নির্যাতি-নিষ্পেষিত। ভুক্তভোগীরা আরও জানান, সম্প্রতি বানারেরপাড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ঈমাম মাওলানা মুকছেদের ছেলে সরোয়ার হোসেনকে সুদের (দাদন ব্যবসা) টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে শারিরিক নির্যাতন করেন রতন মেম্বারের ছেলে শেখর। শেখরের দাদা সুলতান আহম্মেদ গাজীপুরের কাউরাইদ এলাকায় মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে আল-বদর ছিলেন। তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধাদের তোপের মুখে পরে আমাদের এলাকায় এসে পরিচয় গোপন করে বিয়ে করে ঘর জামাই থাকা শুরু করেন। তাদের পরিবারের সবাই এলাকার অসহায় মানুষের উপর জুলুম-নির্যাতন চালায় বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ওই এলাকার যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা সুরুজ্জামান খান বলেন, কুখ্যাত সুলতান আহম্মেদ বদরের ছেলে স্থানীয় ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান ওরফে রতন ও তার ছেলে মো. আল আমিন ওরফে শেখর তাদের অত্যাচার-নির্যাতনে এলাকাবাসী অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। তারা বিভিন্ন সময় অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারেনা। অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান এই যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা। স্থানীয় ভুক্তভোগী রহমত আলী মাসুদ জানান, রতন মেম্বারের ছেলে শেখরের জান্নাত এন্টার প্রাইজ নামক রড, সিমেন্টের দোকান ঘর বানারেরপাড় বাজারে রয়েছে। গত ২৫-০৪-২০২১ ইং তারিখে শেখরের কাছে আমি ঘরের বিল্ডিংয়ের ছাদের কাজের জন্য ১ লাখ ৯৬ হাজার টাকা জমা রাখি। পরবর্তীতে আমার ঘরের ছাদের কাজের জন্য তার কাছে সিমেন্ট, রড চাইতে গেলে সে বিভিন্ন টালবাহানা করে। একপর্যায়ে সে টাকা নেয়নি বলে অস্বীকার করে এবং আমাকে হুমকি-ধামকি দেয়। পরবর্তীতে সে আমাকে জাল টাকা দিয়ে ফাঁসিয়ে দিবে বলেও হুমকি প্রদান করেন। তিনি বলেন, তাদের ক্ষমতার দাপটে অনেকেই তাদের কাছে আজ জিম্মি হয়ে পড়েছে। রতন মেম্বার ও তার ছেলে শেখর আমাকে টাকা না দিয়ে উল্টো আমার নামে থানায় মামলা দায়েরও করেছেন। আমি এর সুষ্ট বিচারের দাবি জানাচ্ছি। অভিযোগ প্রসঙ্গে স্থানীয় ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান রতন বলেন, একটি কুচক্রিমহল আমার সমিতি নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ করছে। সমিতির নিয়মানুযায়ী সমিতি চলছে। এখানে কোন অনিয়ম করা হয়নি। রহমত আলী মাসুদের কাছ থেকে রড, সিমেন্টের টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার সাথে আমার কোন ধরনের লেনদেন হয়নি। এ প্রসঙ্গে উপজেলা সমবায় অফিসার আতিকুর রহমান জানান, সমিতির সদস্যের বাইরে কাউকে ঋণ দিলে সেটা নিয়মনীতির বাইরে। কোন সদস্য কিস্তি না দিতে চাইলে তাকে ন্যূন্যতম জরিমানা করা যায়। কিন্তু ৫০০০ হাজারের মত বেশি টাকা জরিমানা করা এটা নিয়মের বাইরে। এ বিষয়ে কোন সদস্য অভিযোগ দিলে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।
Posted ৪:৫৯ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৯ আগস্ট ২০২১
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।