শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

>>
কষ্টের মাঝে যৌনকর্মীরা   

জামালপুরে লকডাউনে রানীগঞ্জ যৌন পল্লীতে নেই কোন খদ্দের   

আল মাসুদ লিটন   |   বৃহস্পতিবার, ০৮ জুলাই ২০২১   |   প্রিন্ট

জামালপুরে লকডাউনে রানীগঞ্জ যৌন পল্লীতে নেই কোন খদ্দের   

জামালপুর শহরের রানীগঞ্জ যৌনপল্লীর বাসিন্দা মালা বলেন, স‍াতদিন ধরে লকডাউন। পল্লীতে খদ্দের আসে না, কামাই-রোজগার একদম নাই। ঘরে নেই খাবার,পায়নি সরকারি-বেসরকারি কোনো সাহায্য-সহযোগিতা। ঘর ভাড়া নিয়ে চোখে মুখে দেখছেন অন্ধকার। চলতি লকডাউনে এভাবেই কাটছে যৌনকর্মী দের দুর্বিষহ জীবন।ঋণ করে খেয়ে না খেয়ে কোনমতে দিন পার করছি। ঘর থেকে চোখ মুছতে মুছতে বেরিয়ে এলেন (৩৫) বছর বয়সী যৌনকর্মী বেবী। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললেন, ক্ষিধার জ্বালা আমরা সহ্য করি। কিন্তু বাচ্চারা ক্ষুধায় কান্নাকাটি করে। ওদের মুখের দিকে তাকাতে পারি না। কার কাছে চাবো সকলের একই অবস্থা।পল্লীর গলিতে পান দোকানে বসে আছেন, রঙ্গমালা (৪০) চোখে মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ,সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই বলে উঠলেন, আমাদের খবর কে রাখে  সাতদিন ধরে লকডাউন। খদ্দের না থাকায় কামাই করতে পারতেছি না। আমাদের খুব কষ্ট পেঠে খাবার নাই। এখানে অনেক মানুষ না খাইয়াই থাকে।  তিনি বলেন কেউ কেউ একবেলা আধপেট খাইয়া ক্ষিধার জ্বালা মেটায়। অনেকে গলির ধারে বসে ক্ষুধার জ্বালায় কান্দাকাটি করে। আমাদের কষ্ট দেখার কেউ নাই। এ পর্যন্ত আমরা সরকারি-বেসরকারি কোন সায্য-সহযোগিতা পাই নাই। জামালপুর শহরের দয়াময়ী পাড়া এলাকায় রানীগঞ্জ যৌনপল্লীতে রোববার দুপুরে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পল্লীর চারপাশে ময়লা অবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ।  নোংরা  গন্ধেই এদের বসবাস, চলতি লকডাউনে নেই খদ্দেরের আনাগুনা। ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে থাকা যৌনকর্মীরা কাটাচ্ছে অলস সময়। তাদের চোখে মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে শুকনো মুখগুলো।

তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই যৌনপল্লীতে নারী, শিশু ও বৃদ্ধ মিলে পাঁচশতাধিক লোকের বসবাস। কর্মহীন যৌনকর্মীদের ঘরে ঘরে অভাব দেখা দিয়েছে। খাদ্যের অভাবে খুবই কষ্টের মধ্যে দিনপার করছে তারা। পল্লীর অভ্যন্তরে কারো কাছে সাহায্য প্রাপ্তিরও অবস্থা নেই। সকলেরই একই অবস্থা। বয়স্ক যৌন্যকর্মীদের অবস্থা আরো খারাপ। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে সেখানে এগিয়ে যায়নি সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কেউই। ক্ষুধার্ত যৌনকর্মীরা জেলা প্রশাসন ও পৌরসভাসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে দ্রুত সাহায্য চেয়েছেন।জামালপুর পৌরসভার মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানু বলেন, কর্মহীন অসহায় যৌনকর্মীদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। পৌরসভার পক্ষ থেকে দ্রুত খাদ্যের সমস্যা সমাধান করা হবে। কোনো যৌনকর্মী না খেয়ে থাকবেন না। ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেয়া হবে বলে জানালেন পৌর মেয়র। জামালপুরের জেলা প্রশাসক মুর্শেদা জামান জানিয়েছেন, কর্মহীন যৌনকর্মীদের খাদ্যের সমস্যা দ্রুত  তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Facebook Comments Box

Posted ১:২০ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৮ জুলাই ২০২১

dainikbanglarnabokantha.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক

রুমাজ্জল হোসেন রুবেল

বাণিজ্যিক কার্যালয় :

১৪, পুরানা পল্টন, দারুস সালাম আর্কেড, ১০ম তলা, রুম নং-১১-এ, ঢাকা-১০০০।

ফোন: ০১৭১২৮৪৫১৭৬, ০১৬১২-৮৪৫১৮৬

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

design and development by : webnewsdesign.com

nilüfer escort coin master free spins