| বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ | প্রিন্ট
নবকন্ঠ ডেস্ক: চীনা সরকার হাতে ক্রমাগত হুমকি পাওয়া এক সাংবাদিক দেশটি থেকে তার পরিবারসহ পালিয়ে আসা এবং দেশটিতে বিদেশি সাংবাদিকদের অবস্থান সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। এবিসি’তে লেখা এক নিবন্ধে তিনি এসব কথা জানান।
ম্যাথিউ কার্নি নামে ওই সাংবাদিক ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এবিসি’র চীনা ব্যুরো প্রধান হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন। তিনি জানান, ২০১৮ সালের আগস্টে সেন্ট্রাল সাইবারস্পেস অ্যাফেয়ার্স কমিশন থেকে ফোন আসে, এবং সেই ফোনকলই ছিল ‘অন্যরকম কিছু’ হওয়ার সূত্রপাত। আমি এবং আমার পরিবারকে জোরপূর্বক চীন ছাড়তে বাধ্য করার আগ পর্যন্ত তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে তাকে হুমকি দেওয়া হয়।
সেন্ট্রাল সাইবারস্পেস অ্যাফেয়ার্স কমিশনের কর্মকর্তা আমায় বলেছে, আমার প্রতিবেদন চীনের আইন ও নিয়ম ভঙ্গ করেছে,
গুজব ছড়িয়েছে। এবং প্রতিবেদনটি অবৈধ, ক্ষতিকারক তথ্য যা রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা এবং জাতীয় গর্বের ক্ষতিগ্রস্থ করে।
ম্যাথিউ কার্নি নিবন্ধে আরো লিখেছেন, চীনে প্রত্যেক বিদেশি সাংবাদিক দেশটির নজরদারিতে থাকে। শিনজিয়াংয়ে উইঘুরদের গণহারে বন্দীর বিষয়ে যখন প্রতিবেদন করছিলাম, সেসময় এবিসি টিমকে প্রায় ২০ জন চীনের নিরাপত্তা কর্মী ঘিরে ধরে। মাঝরাতে আমাদের হোটেলে কড়া নাড়ে এবং আমাদের দৈনিক কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন করে।
চীন সরকার ভয়ানক হুমকি ও হিংস্রতার বর্ণনা ছাড়াও কার্নি বলেন তিনি দেশটির সরকারের গোপন সাইবার-নজরদারি দেখেছেন।
একবার ভোরবেলা, আমি ঘুম থেকে জেগে দেখে কেউ আমার মোবাইল নিয়ন্ত্রণ করছে এবং আমার ইমেইলে প্রবেশ করছে। তারা সেখানে নিউ ইয়র্কের এক্টিভিস্টদের কাছ থেকে পাঠানো একটি মেইল খুঁজে পায়। তারা সেই মেইল খুলে রেখেই যায় যেন আমি বুঝতে পারি আমাকে উদ্দেশ্যকৃত ভাবেই তারা নজরদারিতে রেখেছে।
কার্নি বলেন, চীনে এবিসির কর্মরত লোকদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তিনি এসব ঘটনা শেয়ার করেননি। তবে এখন তিনি এসব ঘটনা বেইজিংয়ে অবস্থিত এবিসির সংবাদদাতা বিল বার্টলস এবং সাংহাইয়ের এএফআররের সংবাদদাতা মাইক স্মিথের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। কেননা তাদেরকেও চীন সরকার জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল।
তিনি আরো বলেন, চীন কর্তৃপক্ষ দেশটিতে বিদেশি সাংবাদিকদের কাজে হস্তক্ষেপ করে এই ভয় দেখিয়ে যে তারা ১২ মাসের রেসিডেন্সি ভিসা রিনিউ করতে পারবে না।
আমিও ধারণা করেছিলাম আমার সমস্যা হবে তাই ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বেই রিনিউ-এর জন্য ছয় সপ্তাহ আগে আবেদন করি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ১০ দিনের মধ্যে মধ্যে ভিসার রিনিউ পাওয়া যায়। কিন্তু আমি কোন সাড়া পাই নি, বলেন কার্নি।
পরবর্তীতে তাকে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে থেকে সাক্ষাৎ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এছাড়া চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ফোন কলের সময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরপর নানা ঝামেলা অতিক্রম করে চীন ছাড়েন কার্নি।
Posted ৪:২৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।