| সোমবার, ০৫ অক্টোবর ২০২০ | প্রিন্ট
আসাদুজ্জামান নূর, সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে (৩৭) বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় মামলার প্রধান আসামিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। সোমবার (৫ অক্টোবর) ভোরে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ওই গৃহবধূর কাছ থেকে দাবিকৃত টাকা না পেয়ে তাদের করা মোবাইল ফোনে ভিডিওটি ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাতা-রাতি ভাইরাল হলে প্রশাসনের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়। এরপর অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে মূলহোতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম জানান, ২ সেপ্টেম্বর রাতে নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার একলাষপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে কতিপয় সন্ত্রাসী কর্তৃক মধ্যযুগীয় কায়দায় এক নারীকে বর্বরভাবে নির্যাতন করে ভিডিও ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে গত ৪ অক্টোবর উক্ত ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। নির্যাতনের ৩৩ দিন পর ৯ জনকে আসামি করে রবিবার রাত ১টার দিকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন নির্যাতিতা গৃহবধূ (৩৫)। পাশাপাশি ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়। উক্ত ঘটনায় র্যাব ব্যাপকভাবে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে।
র্যাব কর্তৃক গোয়েন্দা নজরদারি ও গোপন অনুসন্ধানের মাধ্যমে র্যাব-১১ এর বিশেষ আভিযানিক দল রবিবার দিনগত রাত আড়াইটায় নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন চিটাগাংরোড এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মো. দেলোয়ার হোসেনকে (২৬) গ্রেপ্তার করে।
এ সময় চাঞ্চল্যকর নারী নির্যাতনের ঘটনায় সম্পৃক্ত ‘দেলোয়ার বাহিনী’র প্রধান মো. দেলোয়ার হোসেনের কাছ থেকে ১টি পিস্তল, ১টি ম্যাগাজিন ও ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে সোমবার ভোর সাড়ে ৫টায় ঢাকা জেলার কামরাঙ্গীচর থানাধীন কামরাঙ্গীচর ফাঁড়ির গলি এলাকা হতে উক্ত চাঞ্চল্যকর নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রধান আসামি মো. নূর হোসেন বাদলকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়।
আসামিদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে গ্রেপ্তারকৃত দেলোয়ার বাহিনীর কয়েকজন সদস্য ভুক্তভোগী গৃহবধূর ঘরে প্রবেশ করে তাকে বিবস্ত্র করে বিভিন্নভাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় শারীরিকভাবে নির্যাতন করে ঘটনার ভিডিও ধারণ করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে পরবর্তীতে টাকা দাবি করে। পরবর্তীতে গত ৪ অক্টোবর ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সারাদেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, দেলোয়ার বাহিনী উক্ত এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা এবং নানান সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সাথে জড়িত এবং ‘দেলোয়ার’ এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাদের ভয়ে এলাকার লোকজন ভীত। দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে দুটি হত্যা মামলা আছে।
Posted ৭:২৫ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৫ অক্টোবর ২০২০
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।