বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

>>

গুনাহ মাফের সহজ উপায়

  |   শনিবার, ১০ অক্টোবর ২০২০   |   প্রিন্ট

গুনাহ মাফের সহজ উপায়

মো. আবদুল মজিদ মোল্লা: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে অন্য জুমা, এক রমজান থেকে অন্য রমজান তাদের মধ্যবর্তী গুনাহের কাফফারা (ক্ষতিপূরণ) যদি সে কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৩৩)

 

আলোচ্য হাদিসে নিয়মিত ফরজ ইবাদত পালনের মাধ্যমে বান্দার গুনাহ মাফের ঘোষণা দিয়েছেন। যাতে মানুষ সহজেই তার গুনাহ মাফ করাতে পারে। যদি মানুষ বড় বড় পাপ পরিহার করে এবং নামাজ-রোজার মতো ফরজ ইবাদতগুলো আদায় করে তবে আল্লাহ তার ছোট ছোট ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে দেবেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় নেক কাজ গুনাহ মিটিয়ে দেয়।’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ১১৪)

 

 

গুনাহের প্রকার

 

আলোচ্য হাদিস থেকে প্রমাণিত হয় গুনাহ দুই প্রকার। এক. সগিরা বা ছোট গুনাহ, দুই. কবিরা বা বড় গুনাহ। ফরজ ও নফল ইবাদত, পাপ কাজের ব্যাপারে আত্মসংযম আর কল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে ছোট ছোট গুনাহগুলো মাফ হয়ে যায়। তবে কবিরা বা বড় গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে তাওবা করা আবশ্যক। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের যা (পাপ) করতে নিষেধ করা হয়েছে তার মধ্যে যা গুরুতর (কবিরা) তা থেকে বিরত থাকলে তোমাদের লঘুতর পাপগুলো মোচন করব এবং তোমাদেরকে সম্মানজনক স্থানে প্রবেশ করাব।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৩১)

 

তাওবাকারীর পুরস্কার

 

তাওবা গুনাহ মাফের প্রধান উপায়। তাওবা ছাড়া কবিরা গুনাহ মাফ হয় না। বিজ্ঞ আলেমরা বলেন, অতীতের পাপের জন্য অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং ভবিষ্যতে পাপের পুনরাবৃত্তি না করার অঙ্গীকারই তাওবা। আল্লাহ তাওবাকারীকে পছন্দ করেন। কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে তাওবাকারীর পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা করো, খাঁটি তাওবা; আশা করা যায় তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের পাপ মোচন করবেন এবং তোমাদের এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার পাদদেশে নহরগুলো প্রবাহিত।’ (সুরা : তাহরিম, আয়াত : ৮)

 

যেসব আমলে গুনাহ মাফ হয়

 

সুরা হুদের ১১৪ নম্বর আয়াত থেকে বোঝা যায়, সাধারণভাবে সব নেক কাজের মাধ্যমে কিছু না কিছু পাপমোচন হয়। এর পরও কোরআন ও হাদিসে গুনাহ মাফের মাধ্যম হিসেবে বিশেষ কিছু আমলের কথা এসেছে। তেমন কয়েকটি হলো—

 

এক. রাসুল (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠ করা : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করবে আল্লাহ তার প্রতি ১০টি রহমত অবতীর্ণ করবেন। তার ১০টি গুনাহ মাফ করে দেবেন এবং ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন।’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ১২৯৭)

 

দুই. ভালোভাবে অজু করা : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো মুসলিম অজু করে, তখন তার চেহারা ধোয়ার সময় পানির ফোঁটার সঙ্গে চোখের গুনাহগুলো ধুয়ে যায়; যখন হাত ধোয়া হয়, হাতের গুনাহগুলো ধুয়ে যায়; যখন পা ধোয়া হয় পানির ফোঁটার সঙ্গে পায়ের দ্বারা কৃত গুনাহগুলো ধুয়ে যায়। এভাবে বান্দা গুনাহ থেকে একেবারে পাক-সাফ হয়ে যায়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৪৪)

 

তিন. নামাজের জন্য মসজিদে যাওয়া : মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘জামাতের নামাজ ঘরের বা বাজারের নামাজ অপেক্ষা ২৫ গুণ বেশি সওয়াবের। কেননা বান্দা যখন উত্তমরূপে অজু করে এবং একমাত্র নামাজের উদ্দেশ্যেই ঘর থেকে বের হয় তো প্রতিটি কদমের বিনিময়ে আল্লাহ তার একটি করে মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং একটি করে গুনাহ মিটিয়ে দেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৪৭)

 

চার. রুকু থেকে উঠে ‘রব্বানা লাকাল হামদ’ বলা : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ইমাম যখন রুকু থেকে উঠে বলে ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদা’ তখন তোমরা বলো, ‘আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদ।’ কেননা যার তাহমিদ ফেরেশতাদের সঙ্গে মিলবে তার আগের সব পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৯৬)

 

আল্লাহ সবাইকে তাওবা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

লেখক : সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা।

Facebook Comments Box

Posted ৯:৫৩ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১০ অক্টোবর ২০২০

dainikbanglarnabokantha.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

হাদিসের শিক্ষা
(550 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক

রুমাজ্জল হোসেন রুবেল

বাণিজ্যিক কার্যালয় :

১৪, পুরানা পল্টন, দারুস সালাম আর্কেড, ১০ম তলা, রুম নং-১১-এ, ঢাকা-১০০০।

ফোন: ০১৭১২৮৪৫১৭৬, ০১৬১২-৮৪৫১৮৬

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

design and development by : webnewsdesign.com

nilüfer escort coin master free spins