মাহদী হাসান সিয়াম, ক্রাইম রিপোর্টার শেরপুরঃ | রবিবার, ০২ জানুয়ারি ২০২২ | প্রিন্ট
শেরপুরে আগুনে পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে ২০ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। রবিবার (২ জানুয়ারি) ভোরে সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের কুসুমহাটি বাজারে ওই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রায় এক কোটি বিশ লাক্ষ টাকার মত ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী সুজন মিয়া জানান, আমার দোকানের নাম সাদিয়া কসমেটিকস। গতরাতেও আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রায় লক্ষাধিক টাকার মালামাল ঢুকেছে। আমার মোট ৩ টি গোডাউনে কসমেটিকস, প্লাষ্টিক ও সূতার আইটেম ছিল। আগুনে আমার সব শেষ করে দিল। এ ঘটনায় আমার ৩০ লক্ষ টাকার মত ক্ষতি হয়ে গেছে। ব্যবসা পরিচালনা করতে গিয়ে আমি ১৫ লক্ষ টাকা ঋন করেছি। সেজন্য বিভিন্ন কারনে আমাকে প্রতিমাসে ৫০ হাজার টাক কিস্তি পরিশোধ করতে হয়। এছাড়াও অনেক মহাজনের কাছ থেকে আমি বাকিতে মালামাল এনেছি। তারাও আমার কাছে ১০ লক্ষ টাকা পাবেন। এখন আমি কি দিয়ে করবো ? আরেক ধান চাল ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানান, গতকাল ১ জানুয়ারি আমার গোদামে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকার চাল ঢুকেছে। আজ ভোরে বাজারের পাহাড়াদার আমাকে ঘুম থেকে নিয়ে এসেছে। বাজারে এসে দেখি আগুনের তান্ডব। দ্রুত সময়ে আগুন এক দোকান থেকে অন্য দোকানে প্রবেশ করছে। আমি এসেও কিছু করতে পারলাম না। আমার সব শেষ হয়ে গেল। এখন আমি মহাজনদের ৩০ লক্ষ টাকার ঋণ কি দিয়ে পরিশোধ করবো ? ঝর্না চাউল আড়তের স্বত্তাধীকারি হযরত মিয়া বলেন, ভাই আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। আমার পরিবারের খরচ কি দিয়ে চালাবো? আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আতপ চাউলসহ নানা ধরনের চাউল ছিল। আগুনে সব পুড়ে কয়লা করে দিয়েছে। সব মিলিয়ে আমরা ১ কোটি টাকার মালামাল এখন পুড়ে ছাই। এবিষয়ে নব-নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাই দৈনিক বাংলার নবকন্ঠ এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, কুসুমহাটি বাজারটি একটি পুরনো ঐতিহ্যবাহী স্থান। যুগ যুগ ধরে এখানে ব্যাবসায়ীরা তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু ২ জানুয়ারি রোববার দিনটি আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টের। আগুনে আজ আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে ২০ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যেখানে ছোট বড় ২০ জন ব্যাবসায়ী একদম পথে বসে গেছেন। স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলেও তারা দেড়ি করে এসেছে। এরপর ক্ষতি কমাতে আশপাশের লোকজন পানি দিয়ে প্রায় ২ ঘন্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। বাজারের দোকানগুলো খুব কাছাকাছি। তাই দ্রুত সময়ে আগুন এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ছড়িয়ে পড়েছে। এঘটনায় প্রায় ৩ কোটি টাকার মত ক্ষতি হয়েছে। আমি যেহেতু নব -নির্বাচিত একজন চেয়ারম্যান। তাই আমি চাইবো সরকার, রাজনীতিবিদ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সমাজের ধর্নাঢ্য ব্যক্তিরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে এসে দাঁড়ায়। যেন তারা ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে সাহস করে পুনরায় ব্যবসা পরিচালনা করতে পারে। এব্যাপারে ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী জাবেদ হোসেন তারেক জানান, প্রাথমিক তদন্তে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাতের প্রমান মিলেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা আবেদন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Posted ৩:০৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০২ জানুয়ারি ২০২২
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।