শনিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

>>
১৪৮ কোটি টাকা পাচারের দায়ে পাপুল স্ত্রী-সন্তান ও শ্যালিকার বিরুদ্ধে মামলা দুদকে অনুমোদন

এমপির শ্যালিকার ৫০০ কোটি টাকা!

  |   বুধবার, ১১ নভেম্বর ২০২০   |   প্রিন্ট

এমপির শ্যালিকার ৫০০ কোটি টাকা!

হায়দার আলী: দিনমজুর বাবার সংসারে তিন বেলা ঠিকমতো খাবার জুটত না। অর্থের অভাবে লেখাপড়াও হয়নি। সেই হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান জেসমিন প্রধান এখন বিত্তশালী। বাড়ি, গাড়ি, আলিশান ফ্ল্যাট—কী নেই তাঁর। সাত বছরের ব্যবধানে তিনি ৫০০ কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। শুধু তাঁর পাঁচটি ব্যাংক হিসাবেই ১৪৮ কোটি ৪২ লাখ টাকার তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অথচ ২৩ বছর বয়সী জেসমিনের নিজস্ব কোনো আয়ের উৎস নেই।

 

দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের মানবপাচারের টাকায় শ্যালিকা জেসমিন প্রধান এখন সম্পদশালী। কুয়েতে মানবপাচারের হোতা পাপুল অর্থ ও মানবপাচারের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া অর্থ আড়াল করতে শ্যালিকার অ্যাকাউন্টে রাখেন। শুধু তা-ই নয়, অবৈধ পথে অর্জিত বিপুল অর্থ বৈধ হিসাবে দেখাতে শ্যালিকা জেসমিনের মালিকানায় ‘লিলাবালি’ নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানও গড়ে তোলেন এমপি পাপুল। ওই প্রতিষ্ঠানের আড়ালে জেসমিন প্রধানের পাঁচটি ব্যাংক হিসেবের মাধ্যমে ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পাচার করা হয় ১৪৮ কোটি টাকা। এই পরিমাণ টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধে এমপি পাপুল, তাঁর স্ত্রী ও সন্তান এবং শ্যালিকার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক।

 

দুদকের তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, খুবই দরিদ্র পরিবারের সন্তান জেসমিন প্রধান। বড় বোন সেলিনা ইসলামের বিয়ে হয় কুয়েতপ্রবাসী কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের সঙ্গে। পাপুল মানবপাচারের মাধ্যমে অর্জিত টাকা শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের অ্যাকাউন্টে এবং নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তোলেন। পাঁচটি অ্যাকাউন্টে ১৪৮ কোটি টাকার এফডিআরসহ জেসমিন এখন প্রায় ৫০০ কোটি টাকার মালিক।

 

অনুসন্ধান প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন ব্যাংকে জেসমিনের প্রায় ৪৪টি হিসাব পাওয়া গেছে। একটি ব্যাংকেই তাঁর ৩৪টি এফডিআর হিসাব রয়েছে। এফডিআর হিসাবের দুই কোটি ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৭.৫৩ টাকার কোনো উৎস জেসমিন দেখাতে পারেননি। সে কারণে অবৈধ সম্পদের অভিযোগে তাঁকে আরো মামলার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

 

সূত্র জানায়, অবৈধ উপায়ে অর্জিত জেসমিন প্রধানের নিজ নামে ২০টি এফডিআরে এক কোটি টাকা, বোন সেলিনা ইসলামের নামে ২৯৫টি এফডিআরে ২০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, বোনজামাই শহিদ ইসলাম পাপুলের নামে ২৩টি এফডিআরে দুই কোটি ১৮ লাখ টাকা পায় দুদক। এ ছাড়া পাপুলের মেয়ে ওয়াফা ইসলামের নামে ৪১টি এফডিআরে দুই কোটি ২৯ লাখ টাকাসহ মোট ২৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা জেসমিন প্রধানের একটি ব্যাংকের হিসাবে লগ্নি করে ২৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার ওভার ড্রাফট সুবিধা গ্রহণের প্রমাণ মেলে। সব মিলে বিভিন্ন হিসাবের মাধ্যমে পাচার হয়েছে ১৪৮ কোটি টাকা।

 

এদিকে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল, তাঁর স্ত্রী এমপি সেলিনা ইসলাম, শ্যালিকা জেসমিন প্রধান ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক। গতকাল মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। শিগগিরই সংস্থাটির অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করবেন।

Facebook Comments Box

Posted ৭:২৩ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১১ নভেম্বর ২০২০

dainikbanglarnabokantha.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আজ বিজয়া দশমী
(970 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক

রুমাজ্জল হোসেন রুবেল

বাণিজ্যিক কার্যালয় :

১৪, পুরানা পল্টন, দারুস সালাম আর্কেড, ১১ম তলা, রুম নং-১১-এ, ঢাকা-১০০০।

ফোন: ০১৭১২৮৪৫১৭৬, ০১৬১২-৮৪৫১৮৬, ০২ ৪১০৫০৫৯৮

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

design and development by : webnewsdesign.com

nilüfer escort coin master free spins