
নবকণ্ঠ ডেস্ক | সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট
ডাক্তারদের ধারণার চেয়েও বেশি আয়ু কমিয়ে দেয় সিগারেট। সিগারেটের ক্ষতি সম্পর্কে নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, একটি সিগারেট একজন মানুষের জীবন থেকে ২০ মিনিট কেড়ে নিচ্ছে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের গবেষকরা বলছেন, গড়ে একটি সিগারেট একজন মানুষের জীবন থেকে ২০ মিনিট কেড়ে নেয়। যার মানে ২০টি সিগারেটের একটি প্যাকেট একজন মানুষের আয়ু প্রায় সাত ঘণ্টা কমিয়ে দিতে পারে।
বিশ্লেষণ বলছে, একজন ধূমপায়ী যদি ১ জানুয়ারি দিনটিতে ১০টি সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দেন, তাহলে ৮ জানুয়ারির মধ্যে তিনি পুরো একটি দিনের জীবন হারানো ঠেকাতে পারেন। আর জানুয়ারির প্রথম দিন থেকে আগামী ৫ আগস্ট সিগারেট পর্যন্ত বন্ধ থাকলে পুরো এক মাস আয়ু বাড়তে পারে। আর পুরো বছর এভাবে ধূমপান ছাড়া থাকলে তারা ৫০ দিনের আয়ু কমে যাওয়া এড়াতে পারেন।
ইউসিএল’র অ্যালকোহল অ্যান্ড টোব্যাকো রিসার্চ গ্রুপের প্রিন্সিপাল রিসার্চ ফেলো ড. সারাহ জ্যাকসন বলেন, মানুষ সাধারণত জানে যে ধূমপান ক্ষতিকর, কিন্তু তারা এটিকে অবমূল্যায়ন করে। গড় হিসাবে ধূমপায়ীরা যারা জীবনভর এটি চালিয়ে যান, তারা প্রায় ১০ বছর আয়ু হারান।
বিশ্বে নানা রোগ এবং মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ ধূমপান। দীর্ঘমেয়াদী ধূমপায়ীদের দুই-তৃতীয়াংশরের মৃত্যুর কারণ হয়ে ওঠে এটি। গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে বছরে প্রায় ৪০ হাজার জনের মৃত্যুর কারণ ধূমপান এবং ইংল্যান্ডের ক্যান্সারে মৃত্যুর এক চতুর্থাংশই হয় এটির কারণে।
১৯৫১ সালে ধূমপানের প্রভাব নিয়ে বিশ্বের প্রথম বড় গবেষণা হিসেবে শুরু হওয়া ‘ব্রিটিশ ডক্টরস স্টাডি’ এবং ১৯৯৬ সাল থেকে নারী স্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণা করা ‘মিলিয়ন উইমেন স্টাডি’র সর্বশেষ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নতুন গবেষণাটি করা হয়েছে।
২০০০ সালে বিএমজে জার্নালে প্রকাশিত পূর্ববর্তী মূল্যায়নে দেখা গেছে, গড়ে একটি সিগারেট প্রায় ১১ মিনিট আয়ু কমায়। জার্নাল অফ অ্যাডিকশনে প্রকাশিত সর্বশেষ বিশ্লেষণে এই সংখ্যাটি প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়, অর্থাৎ পুরুষদের কমায় ১৭ মিনিট এবং নারীদের ২২ মিনিট।
ড. সারাহ জ্যাকসন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে বলেন, কিছু লোক ভাবতে পারে, তারা জীবনের কয়েক বছর জীবন থেকে চলে গেলেও আপত্তি করে না। কারণ তারা মনে করে, বার্ধক্যের সময়ে এমনিতেই দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা বা অক্ষমতা এসে যায়। কিন্তু ধূমপান জীবনের শেষ দিকের অস্বাস্থ্যকর সময়কে এগিয়ে নিয়ে আসে।
তিনি বলেন, ধূমপান অসুস্থতার সূত্রপাতকে আরও এগিয়ে নিয়ে আসে। এর অর্থ হলো, ৬০ বছর বয়সী ধূমপায়ীর স্বাস্থ্য সাধারণত ৭০ বছর বয়সী অধূমপায়ীর মতো থাকবে।
যদিও কিছু ধূমপায়ী দীর্ঘ জীবন যাপন করেন, অনেকে ধূমপান সম্পর্কিত রোগে আক্রান্ত হন। এমনকি তাদের অনেকে ৪০ বছরে মারা যান। ধূমপানের অভ্যাসের পার্থক্য ব্যবহৃত সিগারেটের ধরণ, পাফ গ্রহণের সংখ্যা এবং ধূমপায়ীরা কতটা গভীরভাবে শ্বাস নেয় তার দ্বারা এই বৈচিত্রটি চালিত হয়।
গবেষকরা জোর দিয়েছেন, স্বাস্থ্য এবং আয়ুর পুরো সুবিধা পেতে অবশ্যই ধূমপান পুরোপুরি ছেড়ে দিতে হবে। প্রতিটি বয়সে ধূমপান বন্ধ করা উপকারী, তবে ধূমপায়ীরা যত তাড়াতাড়ি মৃত্যুর এই এসকেলেটর থেকে বেরিয়ে আসবেন, তত তাড়াতাড়ি তারা তাদের জীবন দীর্ঘ এবং স্বাস্থ্যকর হওয়ার আশা করতে পারেন। সূত্র: ইত্তেফাক
Posted ৭:২৩ অপরাহ্ণ | সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
dainikbanglarnabokantha.com | Shanto Banik
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।