| বুধবার, ০৭ অক্টোবর ২০২০ | প্রিন্ট
আরাফাত শাকুর নূর: করোনার ভয়াবহতা জীবনকে এমনভাবে থামিয়ে দিবে কেউ কোনোদিন ভাবিনি। জীবনের বাস্তবতার গণিত একটু জটিল। বেঁচে থাকতে হলে জীবিকা ছাড়া উপায় নেই। অর্থনৈতিক সংকটে আরও বিলীন হওয়ার আগেই ভাবতে হয় জীবিকা আগে পরে জীবন। মহামারির এই সময় যে কতো দৃশ্য দেখলাম! সেগুলো কি ভুলতে পারবো? জুন মাসের প্রথম কয়েকটাদিন কোনোরকম পার করলাম, আর কটা দিন কেন দ্রুত শেষ হয় না?
শেষ হলে মায়ের কাছে যাবো। মা পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর সৃষ্টি। এখানে ভালোবাসার বিনিময়ে শুধু ভালোবাসা। এমন ভালোবাসা যা কোনোদিন কেউ মুছতে পারে না। জুনের প্রায় মাঝামাঝি, দুপুরে মা বলল ‘আমি তো ঘরে আইসোলেশনে আছি। দোয়া করো।’ কথাটা শোনার পর কিচ্ছুক্ষণ আমি আর কথা বলতে পারিনি। চুপচাপ বসে ছিলাম। বললাম রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত এতো ভাববেন না। পরদিন রিপোর্ট আসলো, পজিটিভ!
আমার দু’চোখ দিয়ে শুধু পানি ঝরছে। আমি কি বলবো কি করবো কিছু জানি না! তবুও বললাম, মা কিছু হবে না। ঘরে থাকালেই দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন। আমি বরং চলে আসি, আমিও আইসোলেশন হয়ে থাকি আপনাদের সাথে।
মা বলে, ‘পাগল! আসতে হবে না। ঘরে থেকে চিকিৎসা নিলে সুস্থ হয়ে যাবো।’
আমি শুধু প্রার্থনায় বলি , ‘আমার পরিবারকে রক্ষা করো, রক্ষা করো।
প্রথম কিছুদিন মা অনেক ভয় আর চিন্তা নিয়ে ছিলো। তবে এখন সুস্থ আর ভালো আছে। মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য মনটা অস্থির হয়ে আছে। প্রতিদিন কথা হয়, মাঝে মাঝে মাকে দেখি। সৃষ্টিকর্তার কাছে দিনরাত প্রার্থনা করছি। চোখ বন্ধ করে সবার কথা ভাবি। এ বছর সবাই এক অন্যরকম সময় পার করছি। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা আর বিশ্বাস এখন রূপকথার এক অনুপম শক্তি। আর ক’টা দিন একটু অপেক্ষা, মায়ের কাছে যাবো।
Posted ১০:১৬ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৭ অক্টোবর ২০২০
dainikbanglarnabokantha.com | Romazzal Hossain Robel
এ বিভাগের আরও খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।